Logo

সারাদেশ

তাপদাহে আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

Icon

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ০৭:৫৮

তাপদাহে আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

আমের রাজ্য খ্যাত নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে আম পাকার মৌসুম। অনেক বাগানে পাকা আমের মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই বাজারে আসতে শুরু করবে মৌসুমের প্রথম দফার আম। তবে টানা খরায় আম ঝরে পড়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার বাগান মালিকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর সদরসহ ১১টি উপজেলায় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ টনেরও বেশি। তবে, কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচণ্ড তাপদাহে গাছে থাকা অনেক আম আগেই ঝরে পড়ছে। এতে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ছাড়িয়ে নওগাঁ এখন আম উৎপাদনে দেশের শীর্ষ জেলা। জেলার ৭০ শতাংশ আমবাগান রয়েছে সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলায়। আম্রপালি, বারি-৪, কাটিমন, গোপালভোগ, নাক ফজলি, ক্ষীরসাপাত, ল্যাংড়া, হিমসাগর, আশ্বিনা ও গুটি জাতের আম উৎপাদন হয় এখানে। দেশের বাজার ছাড়াও প্রতিবছর ভারত, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয় এই জেলার আম।

পোরশা উপজেলার আমচাষি মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘আমার ৩৩ বিঘা জমির বাগানে রুপালি, বারি-৪ ও দেশি জাতের আম রয়েছে। এবছর খরা আর তাপদাহে প্রায় ২০ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। বরেন্দ্র এলাকায় পানির সংকট থাকায় ঠিকমতো সেচও দিতে পারছি না।’

সাপাহার উপজেলার চাষি সোহেল রানা বলেন, ‘আমের মৌসুমে সাপাহার ও পোরশার অর্থনীতি জমজমাট হয়ে ওঠে। কিন্তু এবছর আগেভাগেই ঝরে যাচ্ছে অনেক আম। ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় আছি।’

পত্নীতলার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি না হলে ঝরে পড়া আম বাড়বে। ফলন যেমন কমছে, উৎপাদন খরচও বাড়ছে। দাম ভালো না পেলে লোকসান হবেই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘খরার কারণে কিছু আম ঝরে পড়লেও যেগুলো থাকবে, সেগুলোর মান ভালো হবে। খরার আগেই আম মটর দানায় পরিণত হয়েছে। তবে গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি দেওয়া এবং পোকামাকড় দমনে কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার ফলন কিছুটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকতে হবে।’

নওগাঁয় বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদন ক্রমেই বাড়ছে। বাগান মালিকরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করায় এই জেলা এখন ‘আমের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। তবে, প্রকৃতির বিরূপ আচরণে এবার সে খ্যাতি ধরে রাখা কতটা সম্ভব হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

  • এম এ রাজ্জাক/এটিআর
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর