
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জসহ আশপাশের ৯ উপজেলায় আকাশে মেঘ দেখা দিলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং, ভূতুড়ে বিল ও মিটার-সংক্রান্ত হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন গ্রাহকরা।
সরেজমিনে ঘুরে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ সদর, কচুয়া, ফকিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় শিশু-বৃদ্ধসহ সবাই দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
সোমবার (১২ মে) ভোর থেকেই কোনো ঝড় বা বৃষ্টি না থাকলেও সকাল ৭টার দিকেই বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সরবরাহ। এরপর সারাদিনে একাধিকবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা।
পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী আব্দুর রব ফকির বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা করতে পারছি না।
উত্তর সরালিয়া এলাকার বাসিন্দা এস. এম. জাহাঙ্গীর আলম ও বাদুরতলা এলাকার মোস্তফা সেখ বলেন, সকাল থেকে ২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ ছিল না। তারপর সারা দিন বিদ্যুৎ বারবার চলে যাচ্ছে। এই গরমে বাসায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
এদিকে পল্লী বিদ্যুতের সেবাব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে নানাবিধ অভিযোগ। অভিযোগ কেন্দ্রের ফোন নম্বর থাকলেও তা বেশিভাগ সময় বন্ধ থাকে। কোনোভাবে সংযোগ পেলেও কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ অনেকের।
গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, নিয়মিত মিটার রিডিং না দেখে অনুমানভিত্তিক বিল করা হয়। প্রতিবাদ করলে লাইন কেটে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। ফলে বাধ্য হয়ে ভূতুড়ে বিলই পরিশোধ করতে হচ্ছে।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, অভিযোগ কেন্দ্র ফোন করলে সাড়া মেলে না। পেলেও সহনীয় ব্যবহার করে না। আবার প্রতি মাসেই অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে।
এছাড়াও ট্রান্সমিটার পুড়ে যাওয়া, ফেইস পড়ে যাওয়া, মিটার সরানোর মতো নানান টেকনিক্যাল কারণে দিনের পর দিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
বাগেরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) সুশান্ত রায় বলেন, গত দুই মাসে ঝড় ও বৃষ্টির কারণে কিছু সমস্যা হয়েছে। মাঝে মাঝে মেরামতের কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। আগামী মাস থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন—বিদ্যুৎ সংকট না থাকলে ঘন ঘন লোডশেডিং কেন? আর আকাশে মেঘ দেখলেই লাইন বন্ধ রাখার মতো নিয়ম আসলে কার স্বার্থে? এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
- এস এম সাইফুল ইসলাম কবির/এটিআর