-682318000c712.jpg)
ঢাকার আশুলিয়া ও ধামরাই থানায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলা করেছেন মো. শরিফুল ইসলাম সজল (২৮)।
দুই মামলার মধ্যে সময় ও তার আহত হওয়ার বিবরণ একই হলেও ঘটনাস্থল ও আসামির তালিকা আলাদা। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে মামলাগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে।
তবে আশুলিয়া থানার মামলাটি তিনি নিজে করেননি বলে দাবি করেছেন শরিফুল ইসলাম সজল। অন্যদিকে, তার করা মামলার ভিত্তিতে ইতোমধ্যে দুই থানার পুলিশ আলাদাভাবে মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনা ও অভিযোগ একই, স্থান আলাদা
শরিফুল ইসলাম সজল, যিনি সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়নের খেজুরটেক গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে, প্রথমে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যায় (মামলা নম্বর ৫২, তারিখ ২০ আগস্ট ২০২৪)।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ৫ আগস্ট বেলা ১১টায় বাইপাইল এলাকায় আন্দোলনের সময় তিনি বাম হাতে গুলিবিদ্ধ হন। ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৫৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, একই দিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ধামরাই থানা রোডের তিন রাস্তার মোড়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয় ধামরাই থানায় (মামলা নম্বর ৪২, তারিখ ২৮ মার্চ ২০২৫)।
এতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ওসি সিরাজুল ইসলাম ও সাবেক এমপি বেনজির আহমেদসহ ৩৪৬ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৪০০-৫০০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
দুই মামলাতেই গুরুতর ধারা যুক্ত করা হয়েছে-১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৬, ৩০৭, ১১৪, ৩৪ ইত্যাদি।
বাদীর বক্তব্য : এক মামলার দায় অস্বীকার
জানতে চাইলে শরিফুল বলেন, ‘আমার গুলি লেগেছে ধামরাই ঢুলিভিটা এলাকায়। আমি শুধু ধামরাই থানায় মামলা করেছি। আশুলিয়ার মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, এটা আমার সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু লোক আমাকে কাগজপত্র চেয়ে টাকা-পয়সার আশ্বাস দিয়ে ভুল পথে নিয়ে গেছে। কে মামলা করেছে, কীভাবে হলো-তা আমি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’
পুলিশ ও আইনি অবস্থান
আশুলিয়া থানার এসআই সাইফুল্লাহ আকন্দ বলেন, ‘এই মামলায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা সম্ভব নয়।’
ধামরাই থানার এসআই সুবোধ চন্দ্র বর্মণ একই কথা জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির জানান, ‘ধামরাই থানার মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হবে। আশুলিয়ার মামলাটি চলমান থাকবে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বলেন, ‘একই ঘটনায় দুই থানায় মামলা করা নিয়মবহির্ভূত। তদন্তের মাধ্যমে একটি মামলা বাতিল হতে পারে বা আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়ে একটি মামলার অস্তিত্ব তুলে ধরা যায়। যদি প্রমাণ হয় যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করা হয়ে থাকে, তাহলে সিআরপিসির মিথ্যা মামলা দায়েরের বিধানে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’
আরিফুল ইসলাম সাব্বির/এমআই