ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু দিয়ে স্কুলে যাতায়াত
প্রাণহানির আশঙ্কা, দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের

আবু সালেহ, ঠাকুরগাঁও
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ২১:৪৫
-6823692ad3912.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু পেরিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যায় কোমলমতি শিশুরা। একই সেতু ব্যবহার করছেন স্থানীয় প্রায় সাড়ে চারশ মানুষ। এরইমধ্যে সেতু পার হতে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের বরুনাগাঁওয়ে চারাবান খালের ওপর এই কাঠের সেতুটি। সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের (গুচ্ছগ্রাম) বাসিন্দা এবং আশপাশের এলাকার মানুষ এটি ব্যবহার করেন। ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারায় তাদের শহরে যেতে হয় প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে।
চার বছর আগে ইউপি সদস্য আলাউদ্দীন ও স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তখন থেকে আশপাশের লোকজন, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এটি ব্যবহার করছেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের কারণে সেতুর কাঠ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চলাচলের সময় কাঁপতে থাকে কাঠের ফ্লোর। অনেক সময় কাঠ ভেঙেও পড়ে যায়।
বরুনাগাঁওয়ের বাসিন্দারা জানান, ভারী যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী সেতুটি এখন একেবারে জরাজীর্ণ। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সামনে বর্ষাকাল। তখন নদীতে পানি থাকবে। তখন এই ভাঙা সেতু দিয়ে চলাচল আরও কঠিন হয়ে পড়বে। তারা অবিলম্বে সেতুটি মেরামত অথবা নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
ফারিয়া ও মিম নামের দুই কলেজছাত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন ভয় নিয়ে এই সেতু দিয়ে কলেজে যাই। বন্যার সময় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয়। তখন আর এই সেতু দিয়ে যাওয়া যায় না।’
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা বলছেন, সেতুটি দ্রুত ঠিক করা না হলে বর্ষাকালে সন্তানদের স্কুলে পাঠানো সম্ভব হবে না। বৃদ্ধা আলিয়া বলেন, ‘কাঠ পচে গেছে। হাঁটার সময় নিচে তাকালে মনে হয় পড়ে যাব। একদিন কাজে না গেলে খেতে পারি না। সেতু ঠিক না হলে ঘর থেকে বের হতে পারব না।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা আছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘বরুনাগাঁও গুচ্ছগ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা এই কাঠের সেতু। এটি খুবই জরাজীর্ণ। অচিরেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এআরএস