জেমসের গানে কাঁপলো টাঙ্গাইলের শহীদ মারুফ স্টেডিয়াম

রেজাউল করিম, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১৭:৩৬

ছবি : বাংলাদেশের খবর
‘কবিতা, তুমি স্বপ্নচারিণী হয়ে খবর নিও না’, ‘দিওয়ানা দিওয়ানা তোমার প্রেমের দিওয়ানা’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘দশ মাস দশ দিন ধরে গর্ভে ধারণ’, ‘আসবার কালে আসলাম একা’, ‘দুষ্ট ছেলের দল’, ‘বিজলী চলে যেয়ো না’, ‘মীরা বাঈ’, ‘পাগলা হাওয়ার তোড়ে’, ‘না জানি কোহি’—এমন একের পর এক জনপ্রিয় গান গেয়ে টাঙ্গাইল মাতালেন নগর বাউল জেমস।
মঙ্গলবার (১৩মে) রাতে শহরের শহীদ মারুফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (বিবিএফসি) উপলক্ষে আয়োজিত ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। লক্ষাধিক দর্শকের সামনে গানে গানে সেই অনুষ্ঠান রঙিন করে তোলেন জেমস। শ্রোতা-দর্শকের উল্লাসে নিজেও মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন এই জনপ্রিয় রকস্টার।
বিকেল থেকেই জমে ওঠে কনসার্ট, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। টাঙ্গাইলসহ আশপাশের ১২টি উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে দুপুর থেকেই ভক্ত-দর্শকের ঢল নামে স্টেডিয়ামে। অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন স্থানীয় জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পীরাও।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিবিএফসি’র আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানু ও অন্যান্য আয়োজক নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানবীর আহমেদ বলেন, ‘মঞ্চে জেমস মানেই আলাদা এক উন্মাদনা। দর্শকদের পাগলামোর সঙ্গে সঙ্গে তিনিও যেন মেতে উঠলেন উচ্ছ্বাসে।’
শহরের আকুর টাকুর পাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব আজগর আলী বলেন, ‘টাঙ্গাইলে অতীতে এত বড় দর্শকসংখ্যা নিয়ে কোনো আয়োজন হয়নি। শহীদ মারুফ স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকাজুড়ে ছিল উপচে পড়া ভিড়।’
কলেজছাত্রী সুমাইয়া রহমান বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে, কিন্তু গুরু জেমসের গান শুনে সব কষ্ট ভুলে গেছি। তিনি টাঙ্গাইলে এসে এক নতুন ইতিহাস গড়েছেন।’
চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ারম্যান সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দেশের শিল্পীদের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। তারই অংশ হিসেবে এই আয়োজনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছি। আমাদের সবার আগে ভাবতে হবে—বাংলাদেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৭ বছর পর ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে। তারেক রহমানের আহ্বানে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রেখেছে। আমরা চাই, টাঙ্গাইল হোক সন্ত্রাস, মাদক ও কিশোর গ্যাংমুক্ত একটি আদর্শ জেলা।’
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ বলেন, ‘পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল। দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে।’
রেজাউল করিম/এআরএস