পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় তামিম হোসেন (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে তার অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৪ মে) সকালে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ পার্শ্ববর্তী বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পাথরঘাটা উপজেলার পূর্ব লেমুয়া গ্রামের মো. রিপন হাওলাদারের ছেলে মো. রিয়াজ হাওলাদার (২২) ও মঠবাড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ মিঠাখালী গ্রামের মো. তোতা মিয়া হাওলাদারের ছেলে মো. রমজান মিয়া (১৫)। মঠবাড়িয়া জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

নিহত তামিম হোসেন মঠবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ মিঠাখালী মহল্লার বাসিন্দা ইয়াকুব আলী ফরাজির ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

পরিবারে অভাবের কারণে তামিম স্কুলে যাওয়ার পাশাপাশি বাবার অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে সহায়তা করত।

মঠবাড়িয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রুহুল আমীন জানান, ১০০ টাকা নিয়ে কিছুদিন আগে স্কুলছাত্র অটোচালক মো. তামিমের সাথে আসামিদের ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। এর জেরে গত ৭ মে পরিকল্পিতভাবে অটোচালক তামিমকে নির্জন পথে আটকে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে রেখে তার অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় আসামিরা। পরদিন গ্রামবাসী ডোবায় লাশ ভাসতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

এ ঘটনায় নিহত তামিমের মা তাজেনুর বেগম বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।

নিহত তামিম হোসেনের শোকাহত মা তাজেনুর বেগম বলেন, আমার স্বামী পঙ্গু হয়ে ঘরে পড়ে আছে। পেটের দায়ে আমার ছেলে মাঝে মাঝে বাবার অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের খরচ চালাত। আমার ছেলের হত্যাকারীদের কঠোর বিচার চাই।

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. আবদুল হালিম তালুকদার ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, শিশুটির পরিবার হত্যা মামলা দায়ের করলে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে আসামিরা জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।

সৈয়দ বশির আহম্মেদ/এমবি