উপদেষ্টাকে কটাক্ষ
কুড়িগ্রামে ফেসবুক পোস্টের জেরে চাকরি গেল শিক্ষকের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ২০:৪৯
-6828a1e85b7bc.jpg)
মনিবুল হক বসুনীয়া
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিরূপ মন্তব্য করায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার এক সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।
অভিযুক্ত শিক্ষক মনিবুল হক বসুনীয়া রাজারহাটের আবুল কাশেম বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।
শনিবার (১৭ মে) কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, মনিবুল হক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন, যা সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩(খ) বিধির লঙ্ঘন এবং ২০১৯ সালের সংশোধিত ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা’র পরিপন্থী।
এতে আরও বলা হয়, তার আচরণ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তাই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বরখাস্তকালীন তিনি খোরাকি ভাতা প্রাপ্য হবেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে মনিবুল হক বসুনীয়া বলেন, ‘২০২০ সালের ৫ মার্চ সরকার নির্ধারিত দৈনিক টিফিন ভাতা ৬ টাকা ৬৬ পয়সা প্রত্যাখ্যান করি। পরে চট্টগ্রামে শিক্ষকদের এক অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘এই বেতনে চাকরি করতে না চাইলে অন্য পেশায় চলে যান।’ আমি তার মন্তব্যের প্রতিবাদে ফেসবুকে পোস্ট করি। আমাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এটি ফ্যাসিবাদী আচরণ।’
তিনি তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডকে ‘প্রসব বেদনা’ বা ‘অতিপ্রসব’ উপমায় তুলে ধরে বলেন, ‘এই বিভাগের কর্মকর্তারা শিক্ষকদের শত্রু হিসেবে বিবেচনা করেন। সরকার ও শিক্ষকদের মুখোমুখি করতেই তারা নানা নীতিমালা জারি করছেন।’
পোস্টে শিক্ষকদের কর্মঘণ্টা, বেতন, শুক্রবারে প্রশিক্ষণসহ নানা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি মন্তব্য করেন, ‘ফ্যাসিবাদী আমলের মতোই শিক্ষকদের দমন করা হচ্ছে। আমি শনিবার স্কুলে যাব না, শুক্রবার সাব-ক্লাস্টারে যাব না—এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের জন্যই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
এআরএস