‘ছাত্রীকে যৌন হয়রানির’ অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ২১:৫০

ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক ছাত্রীকে ‘যৌন হয়রানি ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার’ অভিযোগে চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিম মিলনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
রোববার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুপুর ১টা পর্যন্ত কুমারখালী-পান্টি সড়কের চৌরঙ্গী বাজার মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এতে সাপ্তাহিক হাটের দিনে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
শেখ রেজাউল করিম মিলনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক মিলন স্যার ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করেছেন। এর আগেও এমন আচরণ করেছেন অনেকের সঙ্গে। কিন্তু কেউ সাহস করে মুখ খোলেনি। আমরা ভয়ে থাকি। এখন আমরা স্যারের শাস্তি চাই।
অষ্টম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী সিনথিয়া খাতুন বলেন, প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্লাস করতে চাই।
চৌরঙ্গী এলাকার মৃত মানিক আলীর ছেলে আইয়ুব আলী বলেন, শিক্ষক মিলনের বিরুদ্ধে পূর্বে এমন অনেক অভিযোগ আছে। কেউ প্রকাশ করার সাহস পায়নি। এবার যেহেতু প্রকাশ হয়েছে, সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, গত ১২ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক উম্মত আলী উপবৃত্তি দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে লাইব্রেরিতে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে রেখে আসেন। এরপর প্রধান শিক্ষক তাকে মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানি করেন।
পরে ভুক্তভোগীর মা ১৫ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
ছাত্রীর চাচা বলেন, আমার ভাতিজিকে প্রধান শিক্ষক খারাপভাবে স্পর্শ করেছে। বিচারের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছি। অভিযোগের পর থেকেই শিক্ষক হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। সঠিক বিচার চাই আমরা।
বিদ্যালয়ে গিয়েও প্রধান শিক্ষক ও বিএনপি নেতা রেজাউল করিম মিলনকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনটিও বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওয়াছেল আলী বলেন, ‘শুনেছি প্রধান শিক্ষক এক ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ কিছু করেছে। যদি সঠিক হয়, তাহলে তদন্ত করে বিচার হওয়া উচিত।’
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার তদন্তে যাওয়া হবে।’
সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে দেন বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমবি