সাটুরিয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট, পাঠদান ব্যাহত

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১৭:৪১

ছবি : বাংলাদেশের খবর
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। উপজেলার ৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮টিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকের ১০টি পদও খালি রয়েছে। এতে পাঠদানসহ শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাটুরিয়ায় ৮০টি বিদ্যালয়ের জন্য ৮০ জন প্রধান শিক্ষক পদের অনুমোদন থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫২ জন। ফলে ২৮টি বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শূন্য অবস্থায় রয়েছে। অন্যদিকে, ৪৬৯টি সহকারী শিক্ষক পদের মধ্যে ১০টি শূন্য রয়েছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় অনেক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে দাপ্তরিক কাজের চাপে ক্লাসে সময় দিতে পারছেন না তারা। ফলে পাঠদান কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
সরেজমিনে কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান নির্ভরযোগ্য হওয়ার কথা, সেখানে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষাদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে অভিভাবকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
খলিলাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শুকুর আলী জানান, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় তিন বছর ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। চারজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও একজন ট্রেনিংয়ে এবং আরেকজন দাপ্তরিক কাজে উপজেলা অফিসে ব্যস্ত থাকেন। ফলে মাত্র দুই শিক্ষক দিয়েই সব শ্রেণির ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না।’
কলাশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রুমানা আক্তার রুমি বলেন, ‘গত মার্চ মাস থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। আমাকে নিয়মিত দাপ্তরিক কাজে উপজেলা অফিসে যেতে হয়। শিক্ষক সংকটের কারণে ক্লাসে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।’
এ বিষয়ে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকের এমন সংকট চলতে থাকলে আমাদের সন্তানরা ভালোভাবে শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত হবে। দ্রুত পদগুলোতে নিয়োগ না দিলে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে।’
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতুল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘উপজেলায় বর্তমানে ২৮টি প্রধান শিক্ষক এবং ১০টি সহকারী শিক্ষক পদের বিপরীতে লোকবল নেই। আমরা শূন্য পদের তালিকা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দফতরে পাঠিয়েছি। দ্রুত পদগুলোতে নিয়োগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মো. মাসুদ রানা/এমআই