Logo

সারাদেশ

২ মাসেও খোঁজ নেই প্রিয়াঙ্কার, কাঁদছেন মা

Icon

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৮:৩৬

২ মাসেও খোঁজ নেই প্রিয়াঙ্কার, কাঁদছেন মা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

মেয়ের মলিন একটি জামা কোলে নিয়ে নীরবে কাঁদছিলেন পদ্মা রানী (৩৫)। পাশেই মেয়ের পাসপোর্ট সাইজের ছবি হাতে নিয়ে নির্বাক বসে ছিলেন তার স্বামী প্রফুল্ল রাজবংশী (৪৪)। প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ তাদের বড় মেয়ে প্রিয়াঙ্কা রাজবংশী (১৬)। পুলিশের সহায়তায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন মা–বাবা।

পরিবার জানায়, ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালীপাড়া এলাকায় নিজেদের বাড়ির পাশ থেকেই গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন প্রিয়াঙ্কা। ওই সময় মুদি জিনিস কিনতে পাশের দোকানে গিয়েছিলেন তিনি।

পরিবারের অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী ভাবনহাটি এলাকার এক যুবক দীর্ঘদিন ধরে প্রিয়াঙ্কাকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি অপহরণের হুমকি দেন। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় আগে থেকে ওত পেতে থাকা যুবক তার পরিবার ও কয়েকজন সহযোগীর সহায়তায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে প্রিয়াঙ্কাকে অপহরণ করে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল ধামরাই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-২৯) করেন প্রিয়াঙ্কার বাবা প্রফুল্ল রাজবংশী। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও একজন বা দুজনকে আসামি করা হয়।

আসামিরা হলেন- ভাবনহাটি এলাকার মো. আশরাফুল হোসেন (২০), তার বাবা ইমান আলী (৪৪), মা আনোয়ারা বেগম (৩৮) ও আবু বকর (৪৪)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আশরাফুল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্রিয়াঙ্কাকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। বিষয়টি জানার পর তার বাবা প্রফুল্ল একাধিকবার নিষেধ করলেও তারা শাসন না করে বরং আশরাফুলকে উসকানি দেন। এরপর অপহরণের হুমকির বিষয়টি সামনে আসে।

প্রফুল্ল রাজবংশী বলেন, ঘরে ঢুকলেই মেয়েটার কথা মনে পড়ে। ঘর ভর্তি তার জামাকাপড়, পড়ার বই, জিনিসপত্র। দেড় মাস ধরে তাকে দেখতে পারছি না। বেঁচে আছে, মেরে ফেলল নাকি পাচার করে দিল—কিছুই জানি না। সবার কাছে অনুরোধ, আমার মেয়েটাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন। পুলিশ, আদালত, আইন ধরেছি। তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনও মেয়েটাকে এনে দিতে পারল না কেউ। আমি আমার মেয়েটাকে ফেরত চাই।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রিয়াঙ্কার মা পদ্মা রানী বলেন, আমি আমার মেয়েটাকে খুব আদর করে মানুষ করেছি। বড় করেছি। মেয়েটা দেড় মাস ধরে কোথায় আছে জানি না। কিছু করতে পারছি না। বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে—আমি আমার মেয়েটাকে ফেরত চাই।

প্রতিবেশীরাও ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মিনু রানী নামে একজন বলেন, মেয়ের মা–বাবা অনেক কষ্ট করে তাকে মানুষ করেছে। কিছু দিন পরই তার পরীক্ষা ছিল। সেই মেয়েটা এভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল। খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। দরিদ্র পরিবারটা অসহায় হয়ে পড়েছে। মেয়েটা অনেক ভালো ছিল। আপনারা সবাই তাকে একটু খুঁজে বের করে দিন।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রিয়াঙ্কা নিখোঁজের বিষয়ে অত্র থানায় একটি মামলা হয়েছে। একজন এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চলমান আছে। অতি শীঘ্রই আশা করি, তাকে আমরা উদ্ধার করতে পারব।

মনোয়ার হোসেন রুবেল/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর