Logo

সারাদেশ

কক্সবাজারে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের অনুমোদন, জেলাজুড়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাস

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১৯:১৬

কক্সবাজারে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের অনুমোদন, জেলাজুড়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাস

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি। একইসাথে অনুমোদন পেয়েছে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্পও। এই খবরে জেলাজুড়ে বইছে আনন্দ ও স্বস্তির ঢেউ।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সোহেল বকস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর এসেছে, মঙ্গলবার এসসিসিজিপির সভায় হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। এখনো অফিসিয়াল পত্র হাতে আসেনি। হয়ত বুধবার চলে আসতে পারে।

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ডা. সোহেল বকস বলেন, আশা করছি দ্রুতই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে। নির্মাণ ব্যয় ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় কাগজ হাতে এলে বলতে পারব। ৫০০ শয্যার এ হাসপাতালটি হবে ১০ তলা বিশিষ্ট।

হাসপাতাল না থাকায় যেসব সংকটে কলেজটি :
২০০৮ সালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের পাশে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শুরু হয় কলেজের কার্যক্রম। এরপর দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৭ সালে ঝিলংজায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে শুরু হয় শ্রেণিকক্ষ কার্যক্রম। কিন্তু হাসপাতাল না থাকায় শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস করতে যেতে হতো ১০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর হাসপাতালে।

শিক্ষার্থীরা জানান, নামে আধুনিক কলেজ হলেও যাতায়াতে আছে মাত্র দুটি সাদামাটা বাস। পাশাপাশি চরম শিক্ষক সংকট ও আবাসন সংকট রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হবে—এমন প্রত্যাশার প্রহর গুনতে গুনতে দুর্ভোগ সঙ্গী করেই বিদায় নিয়েছে কলেজের ১৪টি ব্যাচ।

একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজের সাথে থাকার কথা ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। ন্যূনতম ২০টি বিভাগের চিকিৎসা সেবা। কিন্তু এর কোনো ছোঁয়াই পায়নি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ।

শূন্য পড়ে আছে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের অধিকাংশ পদ। ওএসডি মূলে সহকারী অধ্যাপককে কলেজে সংযুক্তি দিলেও মূলত জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়েই কলেজটির কার্যক্রম চলছে।

এছাড়াও ১০ তলার অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ হলেও সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ৬ তলা। দুটি ছাত্রাবাসের ছয়তলা হওয়ার কথা থাকলেও তিনতলা করেই ফেলে রাখা হয়েছে। যার ফলে কক্ষসংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে থাকতে হয় গণরুমে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এতে নিয়মিত পড়াশোনা ব্যাহত হয়।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদেরও চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। এছাড়াও এখানে সমাগম হয় লাখ লাখ পর্যটকের। সব মিলিয়ে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। যেখানে নির্ধারিত আসনের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাই কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন হলে এটি এ অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়িত হলে সেখানে স্বাভাবিকভাবেই থাকবে সিসিইউ, আইসিইউ ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার।

কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক রিপন চৌধুরী বলেন, আমরা একদম প্রথম দিককার ছাত্র ছিলাম কলেজের। একটি ক্যাম্পাস ও পূর্ণাঙ্গ কলেজের জন্য আমাদের অনেক আন্দোলন ছিল। আজ খবরটি শুনে ভালো লাগছে। বর্তমান অধ্যক্ষ ডা. সোহেল বকস হাসপাতালের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন।

ইমতিয়াজ মাহমুদ ইমন/এমবি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর