চাঁদপুরে আখের জমিতে পোকার আক্রমণ, দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১২:১২
-683011c4ec66e.jpg)
চাঁদপুরে আখের জমিতে হঠাৎ করে মাঝরা ও সাদা পোকার আক্রমণে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। জেলার ফরিদগঞ্জ ও সদর উপজেলায় ব্যাপকহারে এই পোকার আক্রমণ দেখা গেছে। কৃষকদের অভিযোগ, কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না, আবার কৃষি বিভাগের কোনো সহযোগিতাও পাচ্ছেন না তারা।
জানা গেছে, এ বছর চাঁদপুরে আখ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৩৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৬৭৭ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৯ হাজার ৬০ মেট্রিক টন। জেলার সদর, ফরিদগঞ্জ, হাইমচরসহ আট উপজেলায়ই কমবেশি আখের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে স্থানীয় জাতের ‘চাঁদপুর গেন্ডারি’ আখের আবাদই বেশি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনের গাঁও গ্রামের কৃষক মো. কলন্দর খান বলেন, আমাদের এলাকার প্রায় প্রতিটি কৃষকই আখের আবাদ করেছে। কিন্তু গাছ বড় হওয়ার আগেই মাঝরা পোকা, সেমি পোকা ও আরও কিছু অচেনা পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। বাজার থেকে কীটনাশক এনে ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা আমরা পাই না। সেমি পোকা আখের মাঝখান দিয়ে ছিদ্র করে দেয়, ফলে গাছগুলো শুকিয়ে মরে যায়। একসময় পুরো আখটাই পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।
একই গ্রামের কৃষক ছামাদ পাটওয়ারী জানান, আগে ছত্রাক হতো, এবার সাদা এক ধরনের পোকা পাতাগুলো সাদা করে মুচড়িয়ে দিচ্ছে। আবার কালো রঙের পোকা রয়েছে, যা সরাসরি আখের ভেতরে গিয়ে তা নষ্ট করে দিচ্ছে। আরেক ধরনের পোকা আছে, যা পাতা খেয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে।
সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের সেকদী গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর মিজি বলেন, পোকার জন্য ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু কৃষি বিভাগের কেউ আসে না, মাঠে কোনো তদারকি দেখি না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুল হাসান বলেন, এবার আখে মাঝরা পোকার আক্রমণ কিছুটা বেশি। তবে কতটুকু জমিতে আক্রমণ হয়েছে তা এখনো নির্ধারণ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে তদারকি বাড়ানো হবে।
তবে কৃষকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কৃষি কর্মকর্তারা খোঁজ নেন না—এমন অভিযোগ সঠিক নয়। একজন কৃষক ইউনিয়ন বা উপজেলা অফিসে গেলেই তাকে সবধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়।
কৃষকদের দাবি, যথাসময়ে পোকার প্রতিকার না পেলে তারা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন। অনেকেই আখ আবাদে উৎসাহ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
- আলআমিন ভূঁইয়া/এটিআর
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন