বান্দরবান হাসপাতালের আইসিইউ এখন পরিত্যক্ত ‘স্টোর রুম’

বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১৮:১৩

বান্দরবান সদর হাসপাতালের আইসিইউ রুম এখন পরিত্যক্ত ‘স্টোর রুম’।ছবি : বাংলাদেশের খবর
দীর্ঘ পাঁচ বছরেও চালু হয়নি বান্দরবান সদর হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)। অযত্ন ও অবহেলায় বর্তমানে আইসিইউ কক্ষটি ব্যবহৃত হচ্ছে পরিত্যক্ত স্টোররুম হিসেবে।
পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে সরকারের সম্পদ। অন্যদিকে আইসিইউ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।
সরেজমিনে জানা গেছে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে উন্নত চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ৫ শয্যার একটি আইসিইউ কক্ষ স্থাপন করা হয়। সে অনুযায়ী সরবরাহ করা হয় দামী ও গুরুত্বপূর্ণ আইসিইউ যন্ত্রপাতিও। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না হওয়ায় কোটি টাকার এসব যন্ত্রপাতি পড়ে রয়েছে অকেজো অবস্থায়। কক্ষটি এখন রীতিমতো পরিত্যক্ত স্টোররুমে রূপ নিয়েছে। পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হচ্ছে আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটরসহ অন্যান্য মূল্যবান যন্ত্রপাতিও।
সব ধরনের সুবিধা থাকা সত্ত্বেও রোগীরা আইসিইউ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর ফলে সামান্য জটিলতা দেখা দিলেও চিকিৎসার জন্য রোগীদের যেতে হচ্ছে জেলার বাইরে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন দরিদ্র, অসহায় ও সাধারণ রোগীরা। তাই দ্রুত আইসিইউ সেবা চালুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও রোগীরা।
বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আব্বাস উদ্দিন বলেন, আমাদের মতো যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, তাদের একমাত্র ভরসা সরকারি হাসপাতাল। আমরা চাইলেও টাকার অভাবে প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে পারি না। শুনেছি এখানে আইসিইউ আছে। কিন্তু কোনোদিন চোখে দেখিনি। আমাদের যদি কখনো আইসিইউ প্রয়োজন হয়, তাহলে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। যদি এ সেবাটি চালু করা হয়, তাহলে আমাদের অনেক উপকার হবে।
বান্দরবান শহরের স্থানীয় বাসিন্দা তুষার আহমেদ বলেন, অনেক গরিব, অসহায় রোগীরা টাকার অভাবে প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে আইসিইউ সেবা নিতে পারে না। যার কারণে অকালেই অনেক রোগীকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। শুনেছি বান্দরবান সদর হাসপাতালে একটি আইসিইউ সেন্টার আছে। আমরা চাই, এ আইসিইউ সেন্টার দ্রুত চালু করা হোক।
চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে আইসিইউ সেবা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার দিলীপ চৌধুরী।
তিনি বলেন, এমনিতে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে ১০০ শয্যার কার্যক্রম চালাচ্ছি। তাতেই আমাদের বিভিন্ন সময় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার মধ্যে আইসিইউ চালাতে অনেক জনবলের প্রয়োজন। শুধু আইসিইউ সেন্টার বা যন্ত্রপাতি দিলেই তো চালু করা সম্ভব না।
মেডিকেল অফিসার দিলীপ চৌধুরী বলেন, এটি মূলত করোনাকালীন উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য আইসিইউ যন্ত্রপাতিগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনবল না দেওয়ার কারণে সেটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। যদি জনবল দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে আইসিইউ সেন্টারটি চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
সোহেল কান্তি নাথ/এমবি
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন