Logo

সারাদেশ

ঝুঁকিতে লক্ষাধিক মানুষ, বান্দরবানে পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কা

Icon

সোহেল কান্তি নাথ, বান্দরবান

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১৯:১৪

ঝুঁকিতে লক্ষাধিক মানুষ, বান্দরবানে পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বান্দরবানে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছেন লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিবছরই ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দিলেও তা মানছেন না অনেকেই। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি জেনেও বসবাস করছেন হাজার হাজার বাসিন্দা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হয়। এভাবেই বাড়ছে ভূমিক্ষয়ের মাত্রা ও পাহাড় ধসের ঝুঁকি।

ভৌগোলিক কারণে পার্বত্য জেলায় সমতল ভূমির স্বল্পতা থাকায় দরিদ্র মানুষ বাধ্য হয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসতি গড়েন। বান্দরবানের সাতটি উপজেলার নানা পাহাড়ি এলাকায় হাজারো পরিবার এমন ঝুঁকিতে বসবাস করছেন।

জেলা শহরের কালাঘাটা, বনরূপা, ছিদ্দিকনগর, বীর বাহাদুর নগর, লাঙ্গিপাড়া, ইসলামপুর, বালাঘাটা—এমনকি রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদমেও দেখা গেছে একই চিত্র।

কম দামে পাহাড় কিনে বা দখল করে কেউ কেউ রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে সমতল জমিতে ঘর তোলেন, কেউ আবার তা বিক্রি করেন অধিক মূল্যে। এই অব্যবস্থাপনার ফলে বর্ষাকালে বাড়ে ভূমিধ্বস ও প্রাণহানির আশঙ্কা।

বনরূপা পাড়ার বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘যেভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে, তাতে ধস হবেই। প্রশাসন পাহাড় কাটা বন্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

আরেক বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, সমতলে জায়গা কেনার সামর্থ্য নেই। তাই পাহাড়েই থাকি। বর্ষায় সারারাত জেগে থাকি, কখন ধসে পড়ে না পড়ে।’

প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৬ সাল থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত ১০৫ জন পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় অতিভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায়। এতে বান্দরবানেও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ বসতির তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।’

প্রশাসনের একাধিক অভিযানে অবৈধ পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে মামলা হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। ফলে এক দশকে প্রাণ গেছে শতাধিক মানুষের।

এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর