খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল
২৫০ শয্যার হাসপাতাল চলছে ১০০ শয্যার জনবলে
আইসিইউ আছে, চিকিৎসক নেই; সিটি স্ক্যানেরও ব্যবস্থা নেই

ছোটন বিশ্বাস, খাগড়াছড়ি
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১৯:৪২

ছবি : বাংলাদেশের খবর
খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল ২৫০ শয্যার অনুমোদন পেলেও কার্যত ১০০ শয্যার জনবল ও পুরনো ভবনে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামো ঘাটতির পাশাপাশি জনবল সংকট চরমে। এতে চিকিৎসা নিতে এসে বিড়ম্বনায় পড়ছেন রোগীরা। হাসপাতালের নানা অনিয়ম ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে জনমনে।
সূত্র জানায়, ৯ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের নির্মাণকাজ চলছে ধীরগতিতে। তবে এখনো পর্যন্ত কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রয়েছে পুরনো ভবনেই। চিকিৎসক, নার্সসহ মোট ১০৬টি পদ শূন্য। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পদটিও দীর্ঘদিন খালি ছিল। সম্প্রতি ঝালকাঠি জেলা হাসপাতাল থেকে ডা. শামিম আহমেদ যোগ দিলেও একদিন অফিস করার পর তিনি আর কাজে আসেননি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোগীরা বারান্দা ও করিডোরে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বরাদ্দ কম থাকায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাদ্য সরবরাহেও দেখা দিয়েছে অসঙ্গতি। যদিও সম্প্রতি ১০০ শয্যার পরিবর্তে ২৫০ শয্যার খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তবে অবকাঠামো ও জনবল সেই অনুপাতে বাড়েনি।
হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ড নামেই রয়েছে। সেখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই, নেই স্পেশালিস্ট চিকিৎসকও। সিটি স্ক্যান মেশিন না থাকায় রোগীদের নির্ভর করতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিকের ওপর।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে প্যারা মেডিকেল ইন্টার্নশিপে থাকা শিক্ষার্থীরা ডাক্তারদের নাম ব্যবহার করে চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং আচরণ করছেন যেন তারা প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী চিকিৎসক। রোগীদের ব্যবস্থাপত্র রিপ্রেজেন্টেটিভদের কাছে পৌঁছে দিয়ে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, ‘হাসপাতালের ১৮ একর জমির মধ্যে এখন ৮ একর দখলে আছে। বাকি ১০ একর এখনও অবৈধ দখলদারদের হাতে রয়েছে। এই জমি উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
তিনি আরও জানান, চিকিৎসক সংকট মেটাতে জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে ১২ জন চিকিৎসককে ডেপুটেশনে এনে সেবা চালানো হচ্ছে। শিশু, মেডিসিন ও গাইনী বিভাগে কোনো স্থায়ী চিকিৎসক নেই।
উল্লেখ্য, বর্তমানে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়নে দেশের মধ্যে ১৫তম এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৩য় স্থানে রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পূর্ণ জনবল, সরঞ্জাম ও নতুন ভবন চালু হলে পার্বত্য অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতালটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
এআরএস