বহুল প্রত্যাশিত বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) ফেনী জেলা শাখার কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন ২০২৫ দীর্ঘ এক যুগ পর আগামী ১ জুন রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফেনী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬টি বুথে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। 

আসন্ন নির্বাচন ঘিরে জেলার শিক্ষক সমাজের মাঝে বইছে উৎসব মুখর পরিবেশ ও ভোটের হাওয়া। নির্বাচনে মোট ৬৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৩৩ জন প্রার্থী। যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন দুটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেলের ১৩০জন প্রার্থী এবং তিনটি পদে এককভাবে অংশ নিচ্ছেন তিনজন।

নির্বাচনে ৪৩৬ জন ভোটার রয়েছে। কারা হচ্ছেন আগামী দিনের শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত নেতা এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা এবং চুলচেরা বিশ্লেষণ। 

তবে একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হারুন-আলমগীর প্যানেলের সাথে সামছুল-নুরুল আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন মো. হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া ও মোহাং আলমগীর চৌধুরীর প্যানেল। তবে বসে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও। জয়ের লক্ষ্যে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। বসে নেই স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীও।

শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন সমিতির অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ থাকায় নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ীরা বিগত বছরগুলোতে অবসরপ্রাপ্ত ও প্রয়াত শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধ এবং শিক্ষকদের কল্যাণ নিশ্চিত করাই হয়ে উঠেছে প্রধান আলোচ্য বিষয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জেলা শিক্ষক সমিতির বর্তমান অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ফাজিলপুর ডবি¬উ বি কাদরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া এবং সদস্য সচিব ফকিরহাট আবু বকর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাং আলমগীর চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। অন্যদিকে মধুয়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এটিএম সামছুল হক চৌধুরী ও বক্তারমুন্সী মোয়াজ্জেম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলমের নেতৃত্বে গঠিত আরও একটি প্যানেলও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এছাড়া সভাপতি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সামছুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, ক্রীড়া সম্পাদক পদে রতনপুর হাজী সৈয়দের রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমির হোসেন এবং অর্থ সম্পাদক পদে মঙ্গলকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রহিম উল্লাহ। শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শিমুল কান্তি মহাজনকে রিটার্নিং অফিসার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদকে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক সভাপতি প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, এ নির্বাচনের জন্য শিক্ষকদের এক যুগের অপেক্ষা। আমরা প্রথমে নির্বাচনের আয়োজন করতে চেয়েছি, এখন ভালো লাগছে উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। শান্তি পূর্ণভাবে ভোটারেরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে এবং আগামী দিনে যাদেরকে যোগ্য মনে করবে তাদেরকেই নির্বাচিত করবে।

একই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাং আলমগীর চৌধুরী বলেন, নানা জটিলতায় দীর্ঘ ১৫ বছর শিক্ষকরা অবসরকালীন সুবিধা পাননি। ভোটারদের রায়ে আমরা বিজয়ী হলে শিক্ষকদের কল্যাণে নিবেদিতভাবে কাজ করবো এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে আগামী দিনে সমিতির কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবো।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এটিএম সামছুল হক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় অনেক কাজ থেমে ছিল। আমরা সবাই মিলে শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করতে চাই। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নুরুল আলম বলেন, অবসরপ্রাপ্তরা কল্যাণ তহবিল থেকে কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। আমরা সেই তহবিলকে সচল করে সকল সুবিধা নিশ্চিত করব। 

সভাপতি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এটাই প্রত্যাশা। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের পর শিক্ষকরা ভোট দিতে পারছেন, এটা বড় পরিবর্তন।   

এমআই