চামড়ার সরকারি দর বৃদ্ধির ফলে নারায়ণগঞ্জ জেলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার কোরবানির পশুর চামড়ার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা এক লাখের নিচে নির্ধারণ করা হলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার সেই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যাবে।

চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘লবণের সরবরাহ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত থাকলে সংরক্ষণে কোনো সমস্যা হবে না।’

২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে কোরবানির পশুর চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। গত বছর নারায়ণগঞ্জে কোরবানি হয় ১ লাখ ৬৬ হাজার গরু। এ বছরও প্রায় একই মাত্রায় চাহিদা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৯৯ হাজার ২৫২টি। তবে বর্তমানে প্রস্তুত রয়েছে ৮৬ হাজার ৪২৬টি পশু। এর মধ্যে ষাঁড় ৪৮ হাজার ২৭৩টি, বলদ ৬ হাজার ৪৬৫টি, মহিষ ৯১০টি, ছাগল ১০ হাজার ৪৪০টি, ভেড়া ৩ হাজার ৩৮৪টি এবং অন্যান্য পশু ১৬১টি।

ফলে চাহিদার তুলনায় ঘাটতি রয়েছে ১২ হাজার ৮২৬টি পশুর। তবে আগামী কয়েকদিনে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু এসে ঘাটতি পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জেলায় বর্তমানে পাঁচটি উপজেলার প্রায় সাড়ে চার হাজার খামার কোরবানির পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক খামারে পশু বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে।

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর ঢাকার বাইরে প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ছিল ১ হাজার টাকা। এ বছর (২০২৫) সেই দাম বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। ঢাকায় এই দর ১ হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ঢাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫৫-৬০ টাকা। খাসির চামড়া বর্গফুটে ২২-২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় দুই টাকা বেশি।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মান্নান মিয়া বলেন, ‘খামারিদের সারা বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়—প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজাকরণ, খড়, কুড়া, খৈইল ইত্যাদি খাইয়ে পশু লালন করা হচ্ছে। চামড়ার দাম ভালো পেলে খামারিরা আরও উৎসাহিত হবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতিবছরই এই জেলায় বাইরে থেকে গরু আসে। বাজার স্থিতিশীল থাকলে এবং চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হলে খামারিরা লাভবান হবেন।’

এআরএস