Logo

সারাদেশ

এলডিসি উত্তরণ ঐতিহাসিক অর্জন, কৃষিতে আসছে নতুন চ্যালেঞ্জ

Icon

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ০৯:৩০

এলডিসি উত্তরণ ঐতিহাসিক অর্জন, কৃষিতে আসছে নতুন চ্যালেঞ্জ

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি : বাংলাদেশের খবর

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আজ আমরা মুন্সীগঞ্জের মাটিতে একত্রিত হয়েছি। এবারের আলোচ্য বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং পরবর্তী চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাসমূহ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণ একটি ঐতিহাসিক অর্জন। ২০২৬ সালে আমাদের আনুষ্ঠানিক উত্তরণ সম্ভব হবে। যা আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এক নতুন মাইলফলক হিসেবে যুক্ত হবে।

শনিবার (৩১ মে) মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক, মসৃণ ও টেকসই এলডিসি উত্তরণে স্থানীয় পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শমূলক কর্মশালা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা বলেন, ‘এ উত্তরণ আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থানের স্বীকৃতি দিলেও এর সাথে কিছু চ্যালেঞ্জও অনিবার্যভাবে আসবে। বিশেষ করে কৃষিখাত, যা আমাদের খাদ্যনির্ভরতা, গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও রপ্তানির অন্যতম উৎস। এ উত্তরণ আমাদের নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি করছে। এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সরকার একা এলডিসি উত্তরণের এ বিশাল রূপান্তর ঘটাতে পারবে না। স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব, অংশগ্রহণ ও পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের পরামর্শসভা মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা ও প্রান্তিক জনগণের কণ্ঠস্বরকে জাতীয় কৌশলে অন্তর্ভুক্ত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।

তিনি আরও বলেন, এ উত্তরণের ফলে আমরা হারাতে যাচ্ছি একাধিক আন্তর্জাতিক সুবিধা যেমন শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, রপ্তানি ভর্তুকি, চুক্তির শিথিলতা ও বিশেষ সহায়তা ব্যবস্থা। কৃষিখাতেও এর প্রভাব পড়বে। কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আগের মতো নগদ সহায়তা ও প্রণোদনার সুযোগ থাকবে না।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে কৃষিপণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উচ্চ ফলনশীল জাত, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রয়েছে। প্রান্তিক কৃষকদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা হিসেবে মডেল ঘর নির্মাণ, কোল্ড স্টোরেজ প্রকল্প ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি জানান, কৃষিপণ্যের মানোন্নয়ন ও রপ্তানিতে সহায়তার জন্য ‘মার্কেট অ্যাক্টর বিজনেস স্কুল’ গঠন করা হয়েছে। যেখানে রপ্তানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে দক্ষতা উন্নয়নের কাজ চলছে। গামা ইরিডিয়েশন প্ল্যান্ট, আধুনিক প্যাক হাউজ ও ল্যাব নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্পও চলমান রয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কৃষি আমাদের মেরুদণ্ড। মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা উদ্ভাবনী ও পরিশ্রমী। এখন সময় এসেছে প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্যের দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা শিল্প ও উদ্যোক্তা খাত এবং প্রবাসী শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সুরক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি উপস্থিত সকলকে এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী প্রস্তুতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও মতামত প্রদানের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ইয়ার্ডি কেবলমাত্র দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নিমিত্তে বৈদেশিক সহায়তাই সংরক্ষণ করে না। এ বিভাগ উন্নয়নসংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশে-বিদেশে সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে এমন একটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা ইয়ার্ডির নেতৃত্বে আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। এ দেশের জনগণের অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময়ের ঐকান্তিক চেষ্টা ও শ্রমের স্বীকৃতি হিসেবেই সাম্প্রতিক সময়ে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছি।

এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর