শ্রীপুরে বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি-মারধরের প্রতিবাদে মহাসড়কে বিক্ষোভ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১৭:৫৫

শ্রীপুরে বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি-মারধরের প্রতিবাদে মহাসড়কে বিক্ষোভ। ছবি : বাংলাদেশের খবর
গাজীপুরের শ্রীপুরে চাঁদাবাজি, চালককে মারধর ও গাড়ি ভাংচুরের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ‘প্রভাতী-বনশ্রী’ পরিবহনের চালক ও শ্রমিকরা।
সোমবার (২ জুন) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার জৈনাবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অর্ধশতাধিক বাস দাঁড় করিয়ে তারা বিক্ষোভ করেন। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী।
চালকদের অভিযোগ, রোববার গভীর রাতে জৈনাবাজার এলাকায় একটি নষ্ট গাড়ি ঘোরাতে গেলে চাঁদা দাবি করে স্থানীয় গাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মকবুল হোসেনের ছেলে ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমেদের লোকজন। চাঁদা না দেওয়ায় বাস চালক ও শ্রমিকদের মারধর এবং কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। তারা চালকের এক সহকারী আরিফুল ইসলামকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। যিনি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
এ হামলায় আহতরা হলেন- ‘প্রভাতী-বনশ্রী’ বাসের চালক সুজন মিয়া (৩০), মানিক মিয়া (৩০), সহকারী মনির হোসেন (২৩), আল আমিন (২২), সাব্বির (২২), নজরুল ইসলাম (৩৩), শাহীন (২১), ফরিদ হোসেন (২৩) রুবেল (২৩), রেজাউল (৩০), রনি (৩০) ও সোহেল (৫০)।
প্রভাতী-বনশ্রী পরিবহনের চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে স্থানীয় মেম্বারের ছেলে ফাহিমের নেতৃত্বে ১০-১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৩০-৩৫ জন লোক বাসস্ট্যান্ডে এসে চাঁদা দাবি করে। এরপর চাঁদা না পেয়ে আমাদের ওপর হঠাৎ হামলা চালায়। এ সময় তারা বাস ভাঙচুর করে। তারা প্রতিটি গাড়ির জন্য দুই হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার সহকারী আরিফুল ইসলামকে সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যায়।
আরেক চালক বাবুল মিয়া বলেন, ওরা নিয়মিত চাঁদা তোলে। এবার হঠাৎ চাঁদার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। রাতে এসে হামলা চালিয়ে মারধর করে। আমরা গরিব মানুষ, পেটের দায়ে গাড়ি চালাই। হঠাৎ এসে আমাদের মারধর করে চলে গেছে।
বাসচালকের সহকারী নজরুল ইসলাম বলেন, গত রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ মোটরসাইকেলের হর্নে ঘুম ভেঙে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা মারধর শুরু করে। আমাদের হুমকি দেয়, চাঁদা না দিলে বাসের ভেতরেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবে। আমরা ভয়ে বাস থেকে নেমে যাই। এ সময় একজন সহকারীকে তুলে নিয়ে যায়। তার খোঁজ এখনো পাইনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফাহিম বলেন, আমার নানার জায়গায় গাড়ি রাখা হয়। এখানে আমি কেন চাঁদা দাবি করতে যাব? আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়ে সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। অপরাধী যে-ই হোক, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে। সকাল ৯টা থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সোহেল/এমবি