পুলিশ হত্যা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৩৫৩ আসামি খালাস

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১৯:৫৭

ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে পুলিশ কনস্টেবল জিএম ওমর ফারুক হত্যা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৩৫৩ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২ জুন) দুপুরে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মাহবুব আলম এ রায় প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কনস্টেবল ওমর ফারুক নিহত হন। অভিযোগ ছিল, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে। এরপর উত্তেজিত জনতা কনস্টেবল ওমর ফারুককে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ৩ মার্চ হরিণাকুণ্ডু থানার এসআই হামিদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের ২২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪ থেকে ৫ হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মামলার পরপরই শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড় ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ। গ্রেপ্তার করা হয় হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা মোতাহার হোসেন, উপজেলা জামায়াতের আমির আলাউদ্দিন মণ্ডল, সেক্রেটারি ইদ্রিস আলী, বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেন, আজিজুর রহমান, আনসারসহ শত শত নেতাকর্মীকে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও জনপ্রতিনিধিদেরও গ্রেপ্তার করে ‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছে।
এসব অভিযোগের মধ্যেই ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ পুলিশ ৩৫৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ৯৭ জনকে সাক্ষী করা হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সোমবার (২ জুন) দুপুরে ঝিনাইদহের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তাই সকল আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
সরকারপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি আকিদুল ইসলাম। আর আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ বিশ্বাস।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ বিশ্বাস বলেন, আসামিরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। এজন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। সরকারপক্ষ সুনির্দিষ্টভাবে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।
বুরহান উদ্দীন/এমবি