Logo

সারাদেশ

চরফ্যাসনে নিম্নচাপের প্রভাবে ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

Icon

চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ২০:৩৪

চরফ্যাসনে নিম্নচাপের প্রভাবে ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলার চরফ্যাসন উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার টানা দুই দিনের দুর্যোগে উপজেলার ঢালচর, চরনিজাম, কুকরি-মুকরি, চরপাতিলা ও মুজিব নগরের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকায়।

নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদীর পানি ৭-৮ ফুট বেড়ে যায়। যা ঢেউয়ের তোড়ে বাঁধ সংরক্ষণ প্রকল্পের জিউ ব্যাগ ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বিধ্বস্ত হয় সরকারি আবাসন প্রকল্পের ঘর, স্কুল-মাদ্রাসাসহ তিন শতাধিক বসতঘর। পানিতে ভেসে গেছে পুকুর ও ঘেরের মাছ, কৃষকের গবাদি পশু।

সোমবার (২ জুন) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ক্ষয়ক্ষতির এসব তথ্য প্রকাশ করে।

চরফ্যাসন পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ (পাউবো) এর উপ-প্রকৌশলী আহসান আহম্মেদ জানান, হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের খেজুরগাছিয়া বেরীবাঁধ ভেঙে গেলে পানি প্রবেশ করে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের জন্য ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রাজন আলী বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে চরফ্যাসনে ২ হাজার ৯৮৮টি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ১৯৬টি। এছাড়া ২১১ একর চারণভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃত গবাদিপশুর ক্ষতির পরিমাণ ২০ লাখ ২ হাজার ৮৮০ টাকা। এছাড়া খামারের অবকাঠামো, শুকনো খড়, ঘাস, দানাদার খাবারসহ অন্যান্য ক্ষতির পরিমাণ ২৯ লাখ ১৯ হাজার ৮৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে কৃষি খাতে ৪ কোটি টাকার ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে আউশ ধানের বীজতলা ৩৪ হেক্টর, সদ্য রোপা আউশ ধান ১০৫ হেক্টর, শাকসবজি ১৪৪ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২ হাজার ৯৬০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, নিম্নচাপে মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মাছের ঘের ১২০টি, পুকুর ও দীঘি ১ হাজার ২০০টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮ লাখ পোনা ও ১৫৩ দশমিক ০৩৬ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া ৩২টি মৎস্য নৌযানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ঢালচর, চরনিজাম, চর কুকরি-মুকরি, চর পাতিলা ও মুজিবনগরসহ বিভিন্ন গ্রামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তিন শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে টিন প্রদান করা হয়েছে। গৃহহীন পরিবারের মাঝে ৪০ বান টিন বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও টিন বিতরণ করা হবে। এছাড়া শুকনো খাবার, শাড়ি-কাপড় বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তবে উল্লেখিত চারটি খাতের ক্ষতিপূরণ সরকারিভাবে নির্ধারিত নেই।

এম. ফাহিম/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর