বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট, মলমূত্রে বিনষ্ট পরিবেশ

হাওরাঞ্চল (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৫৪

ছবি : বাংলাদেশের খবর
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীপুর তহুরা আমিন (টি আমিন) সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বসেছে গরু-ছাগলের হাট। এতে গরু-ছাগলের পায়ে পিষ্ট হয়ে খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে নষ্ট হচ্ছে পুরো মাঠ। অন্যদিকে মলমূত্রে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
বছরের পর বছর এভাবে হাট বসলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও। কিন্তু এ বছর মাঠে গরু বসানোর কারণে বাজারের মোতাওয়াল্লীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও অলিদুজ্জামান।
জানা গেছে, মদন পৌরসদরে একমাত্র পশুর হাট দেওয়ান বাজার। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার সেখানে পশুর হাট বসে। বাজারটি পরিচালনা করেন দেওয়ান জাহের বখত গং ওয়াক্ফ এস্টেট। কিন্তু ঈদ আসলেই সেখানে অবৈধভাবে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে পশুর হাট বসানো হয়। বছরের পর বছর নিজ ক্ষমতা বলে সেখানে হাট বসালেও বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সোমবার (২ জুন) সাপ্তাহিক পশুর হাট না থাকলেও বসানো হয়েছে হাট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠে জমজমাট পশুর হাট। হাটের আগে দিন থেকেই মাঠজুড়ে খুঁটি পুঁতে তারা পশু বিক্রির জন্য জায়গা নিয়েছে। এতে গরু-ছাগলের পায়ে পিষ্ট হয়ে খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে নষ্ট হচ্ছে পুরো মাঠের খেলার পরিবেশ। অন্যদিকে মলমূত্রে বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে। বর্ষার মৌসুম হওয়ায় মাঠে সারাক্ষণ কাদা জমে থাকে। আমরা চাই এই গরুর হাট বন্ধ হোক। আমাদের মাঠে গরুর হাট চলবে না। গরুর হাটের কারণে বিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রউফ বলেন, ‘মাঠে পশুর হাট বসানো বন্ধ করার জন্য প্রতি বছর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। বরং আমি শত্রু হয়ে যাই। তাই এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।’
এ বিষয়ে দেওয়ান জাহের বখত গং ওয়াক্ফ এস্টেট এর মোতাওয়াল্লী মোদাচ্ছের হোসেন শফিক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মাঠে আমি গরু আনতে বলিনি। বিক্রেতারা এসে গরু নিয়ে বসে । এ জন্য ইউএনও আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি (ইউএনও) অলিদুজ্জামান বলেন, কি কারণে বিদ্যালয়ের মাঠে গরু উঠেছে তা জানতে দেওয়ান জাহের বখত গং ওয়াক্ফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’
নিজাম তালুকদার/এমআই