খাগড়াছড়ির ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ওষুধের তীব্র সংকট চলছে। জেলার ৯টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নে থাকা এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে এসে ওষুধ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন রোগীরা।

পার্বত্য এই জেলার দুর্গম অঞ্চলের সাধারণ মানুষের একমাত্র নির্ভরতার জায়গা এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বিশেষ করে মাতৃকালীন স্বাস্থ্যসেবার জন্য অনেক নারী নির্ভর করেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। কিন্তু ওষুধ না থাকা এবং পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসাসেবা কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে।

সেবা নিতে আসা এক নারী জানান, ‘আমরা চিকিৎসা নিতে এসে কোনো ওষুধ পাইনি। এখানে যারা আসে, বেশিরভাগই গরিব মানুষ। সরকার যদি ওষুধ দিত, তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’

একজন সেবাদানকারী চিকিৎসক বলেন, ‘রোগীদের ওষুধ দিতে না পারায় প্রায়ই আমাদের সঙ্গে তর্কে জড়ায়। দ্রুত ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে আমরা রোগীদের নিয়মিত সেবা দিতে পারব।’

খাগড়াছড়ি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ৩৮৬টি পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ২৩৬ জন। পদ শূন্য রয়েছে ১৫০টি। জনবল সংকটের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের খাগড়াছড়ি জেলার উপপরিচালক ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা নিয়মিত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে গত ছয় মাস ধরে ওষুধের ঘাটতি রয়েছে। জনবল সংকটও প্রকট। ৩৮৬টি পদের বিপরীতে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ কর্মরত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে জেলা পরিষদসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কিছু অভিযোগ রয়েছে কর্মীদের দায়িত্বহীনতা নিয়েও—যদি নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

সচেতন নাগরিকদের দাবি, খাগড়াছড়ির ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে দ্রুত ওষুধ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক অভিজ্ঞ ডাক্তার নিয়োগ দিতে হবে। তা না হলে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা হুমকির মুখে পড়বে।

এআরএস