ঈদুল আজহার বড় উৎসব সামনে থাকলেও দেশের অন্যতম সমুদ্রকেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় এবার পর্যটকের দেখা মেলেনি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ সময়ে যেখানে হোটেল-মোটেলগুলো শতভাগ বুকিং হয়ে যেত। সেখানে এবার বুকিং নেমে এসেছে ১০ শতাংশের নিচে। ফলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

গত কয়েক বছর ধরেই ঈদের পাঁচ থেকে সাত দিন আগে কুয়াকাটার অধিকাংশ হোটেল আগাম বুক হয়ে যেত। উৎসবমুখর পরিবেশে সাজানো হতো হোটেল-মোটেলগুলো। কিন্তু এবারে সেই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না। সৈকতে নেই পর্যটকের ভিড়। ফাঁকা পড়েছে অনেক হোটেল-মোটেল।

সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সৌরভ বলেন, ‘অন্যান্য সময়ে ঈদের আগে অনেক পর্যটক আসতো। এবারে এখনো তেমন কেউ আসেনি। এভাবে চলতে থাকলে কিস্তির টাকা শোধ করতেও সমস্যা হবে।’

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ফরাজি জানান, “বর্তমানে পর্যটক নেই বললেই চলে। তবে সামনে ঈদ উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি রয়েছে। ফোনে কিছু বুকিংয়ের সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি শেষ মুহূর্তে ভালো কিছু হবে। পর্যটকদের জন্য হোটেল রাজমহলের পক্ষ থেকে ২০ শতাংশ ছাড় থাকবে।’

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, “বিগত বছরগুলোতে এই সময় ৮০ শতাংশের বেশি বুকিং হয়ে যেত। এবছর তা অনেক কম। তবে ঈদের কাছাকাছি সময় বুকিং বাড়বে—এমনটাই আশা করছি।”

পর্যটক না আসার পেছনে কিছু কাঠামোগত সমস্যা কাজ করছে বলে মনে করেন কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির।

তিনি বলেন, ‘সি-বিচে ‘জিরো ব্যাগ’ ও ‘জিও টিউব’ ব্যবহারের কারণে সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যার পর পর্যটকদের জন্য বিশেষ কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। যদি বিনিয়োগকারীরা এই দিকগুলোতে গুরুত্ব না দেন, তাহলে কুয়াকাটা পর্যটনখাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।’

ঈদুল আযহার মতো বড় উৎসবের আগে পর্যটকশূন্যতা ব্যবসায়ীদের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এটি পর্যটন খাতে বড় আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে সংশ্লিষ্টরা এখনও আশাবাদী, শেষ মুহূর্তে পর্যটকের আগমনে কুয়াকাটায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।

জাকারিয়া জাহিদ/এআরএস