ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ইউনুছ আলী (৬০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বুধবার (৪ জুন) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এর আগে একই ঘটনায় নিহত হন তার ভাই মহব্বত আলী।

নিহত ইউনুছ আলী উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামের মৃত হবিবার রহমানের ছেলে। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাতিজা অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান।

এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৩৫-৪০টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের দিনই নিহত হন ইউনুছ আলীর আরেক ভাই মহব্বত আলী।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন নিহত মহব্বত আলীর ছেলে এনামুল হক। মামলায় ৫৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জামাল ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে আরিফ হোসেনের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। এর জেরে রোববার সকালে নজরুল মোল্লার অনুসারীরা নাকোবাড়িয়া গ্রামে হামলা চালালে আরিফ হোসেনের সমর্থকরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে মহব্বত আলীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুপুরে তিনি মারা যান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংঘর্ষ ও হামলার আশঙ্কা থাকায় পুলিশকে কয়েকদিন আগে থেকেই বিষয়টি জানানো হয়েছিল। এমনকি সংঘর্ষের আগ মুহূর্তেও জানানো হয়। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সংঘর্ষ ও লুটপাট চলাকালে পুলিশ ইউনিয়নে অবস্থান করছিল। তবুও তারা হস্তক্ষেপ করেনি।

ছোট তালিয়ান গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরের দিকে মহব্বত আলীর নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নজরুল মোল্লার সমর্থকেরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৩৫-৪০টি বাড়িতে হামলা চালায়। গরু, ধান, ঘরের আসবাব—সব কিছু নিয়ে গেছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। পানি খাওয়ার একটি গ্লাসও অবশিষ্ট নেই।

নাটোপাড়া এলাকার জলি খাতুন বলেন, সোমবার দুপুরের দিকে হঠাৎ ২০-৩০ জন এসে তাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তার বোনের বিয়ের জন্য বানানো স্বর্ণালঙ্কারও নিয়ে গেছে। টেলিভিশন, ফ্রিজসহ বাড়ির সবকিছু ভাঙচুর করেছে।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ইউনুছ আলী মারা গেছেন। এ নিয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। তবে সংঘর্ষের আশঙ্কার বিষয়ে কেউ তাকে আগে কিছু জানায়নি বলেও তিনি দাবি করেন।

এমবি