Logo

সারাদেশ

ঈদ আনন্দে মুখরিত ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশ কেন্দ্র

Icon

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ২০:৫৩

ঈদ আনন্দে মুখরিত ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশ কেন্দ্র

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ঈদ আনন্দে মুখরিত ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশ কেন্দ্র

গারো পাহাড়ের পাদদেশে সবুজ ছায়া, অচেনা পাখির কলতান আর পাহাড়ি ঝরনার স্রোতধারায় প্রাণ ভরে উঠেছে মানুষের। ঈদুল আজহার ছুটিতে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশকেন্দ্রে পর্যটকদের ঢল নেমেছে।

পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে অনেকেই ভিড় করেছেন এই পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্রে। ভ্যাপসা গরম কিংবা তপ্ত রোদও থামাতে পারেনি তাদের আনন্দযাত্রা।

গজনী অবকাশকেন্দ্রে সরেজমিনে দেখা যায় ভ্রমণপিপাসু মানুষের উৎসবমুখর ভিড়। দর্শনার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরু করে গজনী অবকাশকেন্দ্র। শেরপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে কাংশা ইউনিয়নের ৯০ একর পাহাড়ি এলাকায় বিস্তৃত এই পর্যটনকেন্দ্রে রয়েছে লাল মাটির উঁচু-নিচু পাহাড়, ঝরনা, গহিন বন, লেক, রংধনু ব্রিজ, পদ্ম সিঁড়ি, স্মৃতিসৌধ, গারো মা ভিলেজ, জলপরি, ডাইনোসর ও ড্রাগন টানেলের মতো কৃত্রিম ভাস্কর্য। শিশুদের জন্য রয়েছে চুকুলুপি পার্ক, নাগরদোলা, এক্সপ্রেস ট্রেন, সুপার চেয়ারসহ নানা রাইড। আধুনিক বিনোদনের অংশ হিসেবে রয়েছে ঝুলন্ত ব্রিজ, কেবল কার, ওয়াকওয়ে ও জিপ লাইনিং।

দর্শনার্থীদের প্রধান আকর্ষণ ঝুলন্ত ব্রিজ। ২০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে পাহাড়ি লেকের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ভিন্নধর্মী রোমাঞ্চ উপভোগ করেন সবাই।

লুৎফর রহমান লাজু জানান, ‘ঈদের সময় প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। ঝুলন্ত ব্রিজে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা এবং প্রকৃতি উপভোগ করা হয়। আমরা ব্রিজের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্কতা রাখি। দর্শনার্থীদের নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানাই।’

এছাড়া রয়েছে ৮০ বর্গফুট উচ্চ ওয়াচ ভিউ টাওয়ার থেকে পুরো গজনী অবকাশ এলাকা দেখা যায়। পাতালপুরী নামে সিমেন্টের বিশাল একটি বাঘের মুখ দিয়ে প্রবেশ করে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে অন্য প্রান্তে বের হওয়া যায়, যা ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা দেয়।

শেরপুর জেলা ব্র্যান্ডিং কর্নারে জেলার ঐতিহ্যবাহী পণ্য ও ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে, বিশেষ করে বিখ্যাত তুলসীমালা চাল।

গজনী অবকাশকেন্দ্রে প্রবেশ ফি ২০ টাকা, ওয়াচ টাওয়ারে উঠতে ১০ টাকা এবং ঝুলন্ত ব্রিজের প্রবেশ ফি ২০ টাকা। যানবাহনের পার্কিংয়ের জন্যও নির্ধারিত ফি নেওয়া হয়।

শ্রীবরদি উপজেলার গৃহিণী সানজিদা জেরিন বলেন, ‘আমরা মা-ছেলে ঘুরতে এসেছি। রোদ ও গরম থাকলেও ছেলে ইব্রাহীমের আনন্দে কোনো কমতি নেই।’

জামালপুর থেকে সন্তানদের নিয়ে গজনীতে ঘুরতে আসা চাকুরিজীবি ওমর ফারুক জানান, ‘ছুটি পেলেই সপরিবার প্রকৃতির কাছে আসি, এখানে এসে আনন্দ পাই।’

পর্যটকদের নিরাপত্তায় ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমীন বলেন, ‘ঈদে পর্যটকদের ভিড় বেশি হওয়ায় সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘গজনী অবকাশকেন্দ্র ঝিনাইগাতীর গর্ব। আমরা এখানে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সর্বোচ্চ সতর্ক। ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।’

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ঈদুল আজহা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর