Logo

সারাদেশ

চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ

দৌলতপুরে সিজারিয়ান ডেলিভারিতে প্রসূতির মৃত্যু

Icon

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ২১:১৯

দৌলতপুরে সিজারিয়ান ডেলিভারিতে প্রসূতির মৃত্যু

ছবি : বাংলাদেশের খবর

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সময় আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং দ্রুত দাফনের পরামর্শ দেয়।

নিহত আখি খাতুন উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামীর নাম ইমন।

রোববার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আখি খাতুনকে প্রথমে থানার মোড়ের ‘আলসেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল’-এ নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা রোগীর শারীরিক অবস্থা জটিল বলে উন্নত পরীক্ষার পরামর্শ দেন। তবে স্বজনদের দাবি, আলসেফার পরামর্শ উপেক্ষা করে স্থানীয় দালালদের প্ররোচনায় তাকে তারাগুনিয়ার ‘আবুল ক্লিনিক’-এ নেওয়া হয়।

নিহতের মা ও খালা জানান, সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের পরপরই আখির অবস্থার অবনতি ঘটে। পেটে চাপাচাপি করার একপর্যায়ে চিকিৎসকেরা তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আখিকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনদের দাবি, তিনি ক্লিনিকেই মারা গিয়েছিলেন। কেবল দায় এড়াতেই তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে নাটক করা হয়।

পরে মৃতদেহ আবার ক্লিনিকে ফিরিয়ে আনা হয়। এ সময় স্বজন ও এলাকাবাসী ক্লিনিকের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করে, ভাঙচুরেরও চেষ্টা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে মৃতের পরিবারকে ডেকে মীমাংসার প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং টাকার বিনিময়ে রাত ৮টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয় বলে জানা গেছে।

ঘটনার দিন ক্লিনিকে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স চালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘রোগীকে গাড়িতে তোলার পর কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, রোগী মৃত। পরে তারা ইসিজি করে ডেথ সার্টিফিকেট দেন এবং লাশ আবার ক্লিনিকে ফেরত আনা হয়।’

সিজারিয়ান অপারেশনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আলসেফা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক সুজন হোসেন বলেন, ‘রোগীর জটিল অবস্থা দেখে আমরা উন্নত পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু স্বজনেরা আমাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে অন্যত্র নিয়ে যান।’

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ‘সিজারের আগে অন্তত ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত রোগীকে না খাওয়ার নিয়ম থাকলেও, আখি খেয়েছিলেন এবং তা চিকিৎসকদের জানাননি। এতে জটিলতা দেখা দেয় এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।’

এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর