রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় লোকজন। বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস থামিয়ে তারা এ অবরোধ শুরু করেন। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্টপেজের দাবিতে আন্দোলন চললেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে তা রাখেনি। তাই আজ প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে তারা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি জানান।

আন্দোলনকারীদের অন্যতম সুমন বলেন, নন্দনগাছী স্টেশনটি শত বছরের পুরোনো। লাইনের সংস্কার হলেও এখনো একটি মাত্র লোকাল ট্রেন ছাড়া আর কোনো ট্রেন থামে না। এর আগে ১ মে বিক্ষোভ করেছিলাম। তখন রেল কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে স্টপেজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।

স্টেশনের ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেছে, ১৯২৯ সালে রাজশাহীর নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায় নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপন করা হয়। এক সময় স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ ১২ জন জনবল থাকলেও বর্তমানে শুধুমাত্র একজন পোর্টারম্যান কর্মরত আছেন। ২০১৫ সালের শেষ দিকে স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে দিনে মাত্র দুটি লোকাল ট্রেন এখানে থামে।

বিক্ষোভের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সাগরদাঁড়ি ট্রেনের যাত্রী সুজন আলী বলেন, ট্রেনটি নির্ধারিত সময়েই রাজশাহী থেকে ছেড়েছিল। কিন্তু এখানে এসে দাঁড়িয়ে গেছে। পরে দেখি, রেললাইনে লাল পতাকা টানিয়ে অবরোধ করছেন এলাকাবাসী। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আমরা ট্রেনেই বসে আছি।

আরেক যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, এই রুটে অনেক রোগী চিকিৎসার জন্য রাজশাহী আসেন। ট্রেনের বগিগুলোতে নারী ও শিশু রয়েছে। গরমে সবার অবস্থা খারাপ। দ্রুত রেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গেল ১ মে চারঘাট ও বাঘা উপজেলার হাজারো মানুষ একই দাবিতে নন্দনগাছী স্টেশনে বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও একটি লোকাল মেল ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন। তখন কিছুক্ষণ ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল।

স্থানীয়রা জানান, স্টপেজ না থাকলেও ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য প্রায়ই কিছু সময় এখানে দাঁড়ায়। প্ল্যাটফর্মে ছাউনি থাকলেও তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এ বিষয়ে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের গার্ড মজিবুদ দৌল্লা বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা ছিল না। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এদিকে পাকশী জিআরপি থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, স্টেশন এলাকায় একটি ট্রেন থেমে আছে। আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

• ডিআর/এটিআর