রাজশাহীতে ৩ ঘণ্টার অবরোধ শেষে স্বাভাবিক হলো রেল চলাচল

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০৯:৩৬
-6848f9dabc4e9.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি (স্টপেজ) ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলে প্রায় তিন ঘণ্টা। অবশেষে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধরা। এরপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে রেল চলাচল।
অবরোধ চলাকালে স্টেশনের দুই প্রান্তে লাল পতাকা টানিয়ে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, ঢাকাগামী সিল্কসিটি, বনলতা ও মধুমতি এক্সপ্রেসসহ একাধিক আন্তঃনগর ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষী নন্দনগাছী স্টেশনে বর্তমানে কেবল দুটি লোকাল ট্রেন থামে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে প্রতিদিনই একাধিক আন্তঃনগর ট্রেন সাময়িকভাবে দাঁড়ায় ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য। স্টেশনটির অবকাঠামো জরাজীর্ণ, জনবল সংকট প্রকট—একসময় যেখানে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকতেন, এখন সেখানে মাত্র একজন পোর্টারম্যান কাজ করছেন।
বিক্ষোভকারীদের অন্যতম সুমন বলেন, এর আগেও আমরা ১ মে আন্দোলন করেছিলাম। তখন রেল কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি, তাই বাধ্য হয়ে আবার রাস্তায় নামতে হয়েছে।
অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের যাত্রী সুজন আলী বলেন, ট্রেন নির্ধারিত সময়েই ছাড়লেও এখানে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে দেখি, রেললাইন অবরোধ করে লাল পতাকা টানিয়ে রেখেছে এলাকাবাসী।
আরেক যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, এই রুটে অনেক রোগী রাজশাহী আসেন চিকিৎসার জন্য। ট্রেনের বগিতে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। গরমে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল রেলওয়ে ও জেলা পুলিশের সদস্যরা। পাকশী জিআরপি থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
অবরোধ প্রত্যাহারের পর ধীরে ধীরে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, আগামী ২০ জুনের মধ্যে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে পুনরায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
- মিকাইল/এটিআর