এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণার মাঝে ‘১/১১ ষড়যন্ত্র’ থাকতে পারে : রাশেদ খান

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১৬:৩৫
-68495c0ceb7df.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণার মধ্যে দিয়ে দেশে নতুন করে ১/১১-এর মতো ‘পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার’ ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো আসনে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনরায় ভোট হবে। এপ্রিল মাস গরমকাল ও কৃষকের ব্যস্ততার সময়। সে সময় ভোটার উপস্থিতি কম থাকাটাই স্বাভাবিক। এতে করে কিছু আসনে ভোট কমিয়ে দেখিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় থেকে যেতে পারে। এটি একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত।’
বুধবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
রাশেদ খাঁন বলেন, ‘দেশে ১/১১ নতুন কৌশলে কার্যকর করার ষড়যন্ত্র চলছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়, তবে জাতি তাদের ক্ষমা করবে না।’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে। মাত্র তিনটি দলের ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করা হলে, জনগণ তা মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, ‘সংলাপে মাত্র তিনটি দল এপ্রিল নির্বাচন চেয়েছিল। অন্যদিকে বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অধিকাংশ দল ডিসেম্বরের কথা বলেছিল। তা সত্ত্বেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এপ্রিলে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করেছে।’
করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারা ইস্যুতে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘মানবিক করিডোরের নামে দেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন হবে—এমন কিছু জনগণ মানবে না। বুকের রক্ত দিয়ে ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিদায় ঘটিয়েছে। প্রয়োজনে করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারাও প্রতিরোধ করা হবে। বিদেশি কোনো সংস্থার হাতে চট্টগ্রাম বন্দর তুলে দেওয়া হলে তা মেনে নেওয়া হবে না।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে মনে রাখতে হবে, তারা গণঅভ্যুত্থানের ফসল। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে পাশ কাটিয়ে তারা একক সিদ্ধান্তে নির্বাচন আয়োজন করলে জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের ও উপদেষ্টাদের কাজের সমালোচনা করেছি, কিন্তু কখনও প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি। অথচ জাতি তার ‘পদত্যাগ নাটক’ দেখেছে। সরকার এখনো শেখ পরিবারের কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।’
আওয়ামী লীগকে লক্ষ্য করে রাশেদ খাঁনের ভাষ্য, ‘আওয়ামী লীগের পলাতক সন্ত্রাসীরা প্রধান উপদেষ্টাসহ গণঅভ্যুত্থান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও হুমকি দিচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে—তারা দেশ থেকে কীভাবে পালাল, কারা তাদের পালাতে সাহায্য করল?’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারের উপদেষ্টাদের পিএস-এপিএসরা দুর্নীতিতে জড়িত। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে কয়েকজনের নামে ফাইল খুলেছে। যাদের অফিসেই দুর্নীতি, তারা কেমন করে দেশের সংস্কার করবেন?’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট আত্মীয়স্বজনসহ পালিয়ে গেছেন। এখন দিল্লিতে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন এবং অডিও বার্তা দিয়ে সাধারণ কর্মীদের উসকানি দিচ্ছেন। এই ফাঁদে পা দিলে জনগণ কাউকেই ছাড় দেবে না। শেখ হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগের রাজনীতিও পালিয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল রাজন, পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি রাসেল আহমেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রিহান হোসেন রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
এম বুরহান উদ্দিন/এআরএস/এনআর/
প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন