ময়মনসিংহে দু’গ্রামের সংঘর্ষে আহত ২০, মহাসড়কে যানজট

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১৯:৩৩

ময়মনসিংহে দু’গ্রামের সংঘর্ষে আহত ২০, মহাসড়কে যানজট। ছবি : বাংলাদেশের খবর
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কানারামপুর এলাকায় মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দাঁড় করানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের বেলালাবাদ কানারামপুর বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে কানারামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা রাখাকে কেন্দ্র করে দত্তপুর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম ও উত্তর পালাহার গ্রামের সজল মিয়ার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে শুক্রবার সকালে কানারামপুর বাজারে দুই গ্রামের লোকজন মীমাংসার জন্য বসেন। তবে আলোচনা ব্যর্থ হয়ে উল্টো উত্তেজনা বাড়ে। একপর্যায়ে মহাসড়কের এমএন ফিলিং স্টেশনের সামনে দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন- উত্তর পালাহার গ্রামের কাঞ্চন (২৮), ইসরাফিল (৪৮), আল আমিন (২৫), অপু (২০), হিমেল (২৫) এবং দত্তপুর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম (৪০), শরীফ মিয়া (২৫), ফারুক (৩০), রমজান মিয়া (৩৩), ফজলুর রহমানসহ (৫০) অন্তত ২০ জন। আহতদের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান কর্মচারী সমিতি কানারামপুর রোডে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটির অনুমোদন দেয়। ১১ জুন এ কমিটির অনুমোদন দেন সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী। কমিটিকে কেন্দ্র করে দত্তপুর ও উত্তর পালাহার গ্রামের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। উভয়পক্ষই কমিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল।
সংঘর্ষে জড়িত অভিযোগে দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করেছেন।
দত্তপুর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অটোচালককে মারধর করছিল মানিক আর সমুন। সেটার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার ওপর হামলা করেছে। আজকেও তারা দলবল নিয়ে আক্রমণ করেছে।’
উত্তর পালাহার গ্রামের সজল মিয়া বলেন, ‘আমার এলাকার ছোট ভাইদের আনোয়ারুল মারধর করছিল। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করলে আমাকেও গলা চেপে ধরে। মোটরযান কর্মচারী সমিতির কমিটি ঘোষণার পর থেকেই তারা এমন শুরু করেছে।’
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ঈদুল ফিতরে ৫ এপ্রিল কানারামপুর বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির ঘটনায় নান্দাইল মডেল থানার এএসআই সালেহুর রহমান বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করেন। এ ঘটনায় সে সময় দত্তপুর গ্রামের শাহজাহান ও ইউসুফ মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। চাঁদাবাজির সেই মামলায় দত্তপুর গ্রামের লোকজনকেই বেশি আসামি করা হয়েছিল।
নান্দাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়জুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সারোয়ার জাহান রাজিব/এমবি
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন