Logo

সারাদেশ

কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা ল্যাবের যন্ত্রাংশ চুরি

Icon

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১২:৪৩

কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা ল্যাবের যন্ত্রাংশ চুরি

ছবি : প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কোভিড। গত সপ্তাহে রাজধানী ঢাকা থেকে আসা দুজন কোভিড পজিটিভ রোগী ২৫০ শয্যা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়াও ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এসব উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। এ অবস্থায় সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা পরীক্ষার জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা একমাত্র পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। মাস খানেক আগে চুরির বিষয়টি টের পায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জানা যা, প্রায় চার মাস আগে থেকে ধাপে ধাপে এই চুরি সংঘটিত হলেও মাস খানেক আগে জানতে পেরেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ল্যাবের যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৬ এপ্রিল করোনা ভাইরাস শনাক্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে একটি একতলা ছোট ভবনে পিসিআর ল্যাবের যাত্রা শুরু হয়। সে সময় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে এটি স্থাপন করা হয়। করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার পর এক বছর আগে পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

জানা যায়, এ ল্যাবের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলোজি বিভাগের। সংশ্লিষ্ট দুজন কর্মচারীকে ল্যাবটি এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। মাস খানেক আগে চুরির বিষয়টি জানতে পারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হোসেন ইমাম পিসিআর ল্যাবের যন্ত্রাংশ চুরির বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ধারণা করছি গত চার মাস ধরে ধাপে ধাপে চুরির ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একমাস আগে বিষয়টি টের পেয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের রির্পোটও জমা দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, ল্যাব বন্ধের পর দেখভালের জন্য যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের চরম অবহেলা রয়েছে বলে হয়েছে। এদিকে করোনা মোকাবেলাসহ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় আমরা ওয়ার্ডগুলো প্রস্তুত রেখেছি। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

এদিকে জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, ২০১৯ সাল থেকে কোভিডের বিস্তার শুরু হলেও ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত এ জেলায় কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৫৫ জন। আক্রান্ত হয়েছিলেন চার হাজারের মতো রোগী।

বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ২০২১ সালের জুলাই মাসে ৩৪২ জন কোভিড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়। একই বছরের আগস্টের পর থেকে এই মৃত্যুর হার কমতে থাকে। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেন সংকটে হাসপাতালেই ঝরেছে অনেক প্রাণ।

এদিকে আবারও নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে কোভিড। সেই সঙ্গে জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

শুক্রবার (১৩ জুন) জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ২০ জন নারী-পুরুষ জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নার্সরা তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।

কু‌ষ্টিয়ায় নতুন করে আতঙ্কের বিষয়টি জানিয়ে কু‌ষ্টিয়া জেনা‌রেল হাসপাতা‌লের আবা‌সিক চি‌কিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হো‌সেন ইমাম দৈনিক বাংলাদেশের খবরকে ব‌লেন, করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় ওয়ার্ডগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হ‌চ্ছে। 

‌পি‌সিআর ল‌্যা‌বে চু‌রির বিষয়ে তি‌নি ব‌লেন, পি‌সিআর ল‌্যাবের সব যন্ত্রাংশ চু‌রি হ‌য়ে গে‌ছে। এটা এক‌দিনে হয়‌নি। ধারনা কর‌ছি গত চার মাস ধরেই এ চু‌রির ঘটনা ঘটে আসছিলো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একমাস আগে বিষয়‌টি টের পে‌য়ে‌ছে। এ ঘটনায় তদন্ত ক‌মি‌টি গঠন করা হ‌য়ে‌ছে। ক‌মি‌টি তা‌দের রি‌র্পোটও জমা দি‌য়েছে। ল‌্যাব ব‌ন্ধের পর দেখভা‌লের জন‌্য যা‌দের দা‌য়িত্ব দেওয়া হ‌য়ে‌ছিল তা‌দের চরম অব‌হেলা র‌য়ে‌ছে ব‌লে জানান এই চি‌কিৎসক।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

করোনাভাইরাস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর