মেহেরপুরে তীব্র রোদ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তা কিংবা মাঠে কাজ করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন খেটে খাওয়া মানুষ।

বিশেষ করে শ্রমজীবীরা গরম উপেক্ষা করেই কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ধানখোলা গ্রামের জোসনা খাতুন। তিনি জানান, তার ১৪ মাস বয়সী ছেলে রায়ান গত দুই দিন ধরে জ্বর, সর্দি ও পাতলা পায়খানায় ভুগছে। চিকিৎসক ভর্তি লিখে দিয়েছেন।

একইভাবে ধর্মচাকী গ্রামের সুমাইয়া তার শিশু কন্যা হুজাইফাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে বমি শুরু হয়, পরে পাতলা পায়খানাও হচ্ছে।’ চিকিৎসকেরা তাকে ভর্তি করেছেন।

শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। শুধু শিশুই নয়, বেশ কয়েকজন বৃদ্ধকেও হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় দেখা গেছে।

মে মাসের মাঝামাঝি থেকে এখনো পর্যন্ত মেহেরপুর ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। এতে রোদের তীব্রতা ও ভ্যাপসা গরম বেড়েছে। কৃষকদের দিনের কাজ ভোরেই শেষ করতে হচ্ছে। রোদে উপার্জনক্ষম মানুষের আয়ও কমে গেছে বলে জানিয়েছেন ভ্যান ও অটোরিকশা চালকেরা।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা বাড়তির দিকে। শনিবার বেলা ১২টায় মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বিকেল ৩টায় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ ডিগ্রি। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৫২ থেকে ৬৩ শতাংশ। আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, ‘বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র শিশু কনসালটেন্ট ডা. হাবিবুর রহমান জানান, ‘তীব্র রোদ ও গরমে সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়ায়। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের বেশি করে তরল খাবার, মায়ের দুধ ও শাকসবজি খাওয়ানো, ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা এবং রোদে অপ্রয়োজনে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

আকতারুজ্জামান/এআরএস