নদীভাঙনে নিঃস্ব, টেকসই বাঁধ চায় কলাপাড়াবাসী

জাকারিয়া জাহিদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ২০:০৫
-684d81b1df40f.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার উপকূলীয় জনপদে নদীভাঙন ও দুর্বল বেড়িবাঁধের কারণে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হাজারো পরিবার।
জোয়ারের পানি বাড়লেই ভাঙছে বাঁধ। তলিয়ে যাচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি।
রাবনাবাদ ও আন্দারমানিক নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধের অভাবে প্রতি বছর বর্ষা এলেই এই দুর্দশা নেমে আসে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কলাপাড়ার তথ্য অনুযায়ী, করমজাতলা এলাকায় ৫৪/এ পোল্ডারের ১ হাজার ১২০ মিটার বাঁধে গত চার মাস আগে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ও টিউব বসানো হয়।
কিন্তু ইতোমধ্যে এসব পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে। ঢেউয়ের আঘাতে ব্যাগ ছিঁড়ে বালু বেরিয়ে যাওয়ায় বাঁধের স্লোপ ভেঙে পড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোথাও কোথাও নিম্নমানের, পুরোনো ও ছেঁড়া টিউব ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
করমজাতলার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিচে ব্যাগ নেই, টিউবগুলো ছেঁড়া। এবার বর্ষা নামলে অনেক ক্ষতি হবে।’
আরেক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, নদীতে বছরের পর বছর ড্রেজিংয়ের ফলে ভাঙন বেড়েছে, অথচ কোনো টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পাউবো’র উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যা রতন সরকার জানান, ‘মাটি সংকট ছিল, দূর থেকে সংগ্রহ করতে হয়েছে। তবে কাজটি সুন্দরভাবে করার চেষ্টা করেছি।’
উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি একটি ‘ক্রিটিক্যাল’ জায়গা। টেকসই বাঁধ ছাড়া এখানে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব নয়।’
চম্পাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার বলেন, ‘বর্ষা আসার আগেই টেকসই বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন। নাহলে এবার বড় ক্ষতি হতে পারে।’
বহু বছরের নদীভাঙনে ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা। এখনো অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে বাঁধের ওপর মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি স্থায়ী বাঁধ না হলে আগামীতে উপকূলের অনেক গ্রাম হারিয়ে যাবে নদীতে।
এআরএস