ঝিনাইগাতীতে প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে বালুদস্যুরা

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ২১:৪৫

ঝিনাইগাতীতে প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে বালুদস্যুরা। ছবি : বাংলাদেশের খবর
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ঘেরা গজনী পর্যটন কেন্দ্র মারাত্মক পরিবেশ সংকটে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গারো পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী নদী-নালা, ঝর্ণা, খাল-বিল থেকে প্রতিনিয়ত বালু ও পাথর উত্তোলন করছে একদল প্রভাবশালী বালুদস্যু। এতে একদিকে যেমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন কেন্দ্র গজনীর ভবিষ্যৎ।
জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গারো পাহাড়ের পাদদেশে ‘গজনী অবকাশ কেন্দ্র’ গড়ে তোলা হয়। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তবে সম্প্রতি আশপাশের পাহাড় ও নদী এলাকা থেকে অবৈধভাবে পাথর-বালু উত্তোলনের কারণে পর্যটন কেন্দ্রটির পরিবেশ হুমকিতে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কালঘোষা নদীর হালচাটি, মালিটিলা, গান্ধীগাঁও, বাঁকাকুড়া, দরবেশতলা, মঙ্গল ঝুড়া, ছোটগজনী ও গজনীসহ আশপাশের এলাকাগুলো থেকে প্রতিনিয়ত বালু-পাথর উত্তোলন করছে একটি চক্র। ট্রাক, মাহিন্দ্রা ও ট্রলির মাধ্যমে এসব প্রাকৃতিক সম্পদ পাচার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ চক্রের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই হুমকি, গালিগালাজ ও হামলার শিকার হতে হয়।
সাম্প্রতিক এক ঘটনায় ঈদের আগে বনবিভাগের অভিযানে পাঁচটি মাহিন্দ্রা গাড়ি আটক করা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে বালুদস্যুরা রাংটিয়া ফরেস্ট রেঞ্জ কার্যালয়ে হামলা চালায় ও কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করে। এমনকি ৪ জুন রাতে উপজেলা সদরে এক সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। কারণ তিনি বালু ভর্তি একটি মাহিন্দ্রা গাড়ির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।
এর আগেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বালুদস্যুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামে। যদিও মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাতে বন্ধ হচ্ছে না এ অবৈধ কার্যকলাপ।
গজনী ফরেস্ট বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ বলেন, লোকবলের অভাব ও নিরাপত্তাজনিত কারণে আমরা রাতে অভিযান চালাতে পারি না। এ কারণে বালুদস্যুরা রাতের অন্ধকারে সুযোগ নিচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে।
শান্ত শিফাত/এমবি