
বাগেরহাটে বিএনপির সম্মেলনে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালী ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে দুই সভাপতিপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
রোববার (১৫ জুন) দুপুরে উপজেলার চরপুটিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী বেলা ১১টায় সম্মেলন শুরু হয়। ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল হালিম খোকনের বক্তব্যের সময় হঠাৎ করে সভাপতি প্রার্থী খলিলুর রহমান শিকদার ও আব্দুস ছত্তার হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। লাঠিসোঁটা নিয়ে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তাদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- শিহাব শিকদার, এমদাদুল হাওলাদার, সাইফুল হাওলাদার, অহিদুল ইসলাম ও মো. হালিম। আহতরা মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বাগেরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সভাপতি প্রার্থী আব্দুস ছত্তার হাওলাদার বলেন, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা আব্দুল হালিম খোকন মূলত খলিলুর রহমান শিকদারের বোন জামাই। আব্দুল হালিম খোকনের বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন, ‘এ ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে আগে একটি সমঝোতা হয়েছিল। এখন আবার নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই’—বিষয়টি আমি জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে বিবেচনার দাবি জানাব। এসব বক্তব্যের সময় নেতাকর্মীরা একে অপরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে খলিলুর রহমান শিকদারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করেন। এতে আমাদের ৬-৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
অপরদিকে খলিলুর রহমান শিকদার বলেন, আমাদের যারা ভোটার (কাউন্সিলর) ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে নতুন ভোটার করা হয়েছে। কৌশলে আমাকে হারানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। এসব কারণে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সম্মেলনে একজন নেতার বক্তব্যকে আমাদের কর্মীরা সমর্থন করেছিলেন। তখনই আব্দুস ছত্তার হাওলাদারের লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। এতে আমাদের ২০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সম্মেলনের প্রধান অতিথি খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে ঘটনাস্থলের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি নেতাকর্মীদের বলেছেন, ‘আপনারা শান্ত থাকুন। আমরা সম্মেলন এখানে স্থগিত করছি। আপনারা যার যার বাড়িতে যান। পরবর্তীতে সম্মেলনের সময় অনলাইনে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ বলেন, সংঘর্ষ হওয়ায় বিএনপির নেতারা সম্মেলন স্থগিত করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
শেখ আবু তালেব/এমবি