
সৈয়দপুরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরের কাছে মিলল ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ছবি : বাংলাদেশের খবর
নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে ব্যক্তির শরীর ও কাপড়চোপড় থেকে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ৬৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি গনি মিয়া নামে পরিচিত। তিনি রংপুর শহরের আলম নগরের রবার্টসনগঞ্জ এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে। বাংলা ও উর্দু ভাষায় কথা বলতে পারেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভবঘুরে জীবন যাপন করছিলেন গনি মিয়া।
স্থানীয় সামাজিক উন্নয়নমূলক সংস্থা ‘রংপুর হিউমিনিটি বাংলাদেশ’-এর দুই স্বেচ্ছাসেবক জয়নুল আবেদীন ও ময়নুল ইসলাম গনি মিয়াকে গোসল করাতে গিয়ে তার জামাকাপড়ের বিভিন্ন ভাঁজে ও জ্যাকেটের পকেটে মোড়ানো অবস্থায় বিপুল পরিমাণ টাকার সন্ধান পান। এছাড়া তার কাছে থাকা একটি পোটলায় জমির একাধিক দলিল পাওয়া গেছে। শনিবার (১৪ জুন) বিকালে শহরের রেলওয়ে মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ময়নুল ইসলাম জানান, প্রায় চার ঘণ্টা গণনার পর এক হাজার টাকার ১২৬টি, পাঁচশ টাকার ৩৫০টি, শতাধিক একশ টাকার নোট ও পকেটভর্তি খুচরা টাকা মিলিয়ে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা পাওয়া গেছে। গরম ও দীর্ঘদিন ব্যবহারে নষ্ট হয়ে যাওয়া ৫-৭ হাজার টাকার নোটও পাওয়া গেছে।
পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে গনি মিয়াকে টাকাসহ থানায় নিয়ে যায়। সেখানে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে টাকার হিসাব করা হয়। পরে সব টাকা সমাজকর্মী রশিদুল ইসলামের জিম্মায় রাখা হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য, শহরের রেলস্টেশন, মসজিদের বারান্দা, উপজেলা চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে ভবঘুরে জীবন কাটাতেন গনি মিয়া। অনেকেই তাকে দান করতেন। যা তিনি খরচ না করে নিজের জামাকাপড়েই লুকিয়ে রাখতেন।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দীন জানান, গনি মিয়ার বাড়ি রংপুরের আলমনগরের রবার্টসনগঞ্জ এলাকায়। ইতোমধ্যে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। রোববার (১৫ জুন) রাতে তাকে তার এক ভাতিজার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওসি জানান, বর্তমানে টাকাগুলো ট্রেজারিতে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরির ব্যবস্থা ও সমাজসেবা বিভাগের মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তার লভ্যাংশ দিয়ে যেন বাকি জীবন ভালোভাবে কাটাতে পারেন, সে ব্যবস্থাও করা হবে।
তিনি আরও বলেন, লোকটি মূলত উপজেলা শহরের জিআরপি এলাকায় বেশিরভাগ সময় থাকেন। তার বাড়ি রংপুরের আলমনগরের রবার্টসনগঞ্জ এলাকায়। জানতে চাইলে ওসি ফইম উদ্দীন বলেন, রোববার রাতে তাকে তার ভাতিজার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
তৈয়ব আলী সরকার/এমবি