জামালের শেষ যাত্রা থেমে গেল কুমিল্লা ইপিজেড মোড়ে

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ২০:১৭
-685178f57933e.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জামাল হোসেনকে (চাপিতলা, মুরাদনগর) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পথেই মৃত্যু হলো তার—কারণ একটাই, যানজটে আটকে থাকা অ্যাম্বুলেন্স।
গত সোমবার দুপুরে স্বজনরা তাকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রওনা হন ঢাকা মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্যে। কুমিল্লা ইপিজেড এলাকায় পৌঁছেই আটকে যায় গাড়িটি। একের পর এক গাড়ির দীর্ঘ সারি আর ভাঙা সড়কে ধীরগতির কারণে সেখানে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট। দীর্ঘক্ষণ আটকে থেকেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জামাল হোসেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন ইপিজেড এলাকায় এমনই যানজট লেগে থাকে। কারখানার শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার জন্য সারি সারি মাইক্রোবাস, বাস, অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায়। নেই কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ। সড়কটি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আওতায় থাকলেও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় তাদের কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।
টমছমব্রিজ থেকে ইপিজেডগামী যাত্রী মামুন বলেন, ‘গাড়িতে উঠেছিলাম, কিন্তু যানজট দেখে মাঝপথে নামতে হয়েছে। পরে হেঁটে ঢুলিপাড়া মোড় পর্যন্ত গিয়ে আবার অটোরিকশায় উঠতে হয়েছে।’
ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রতিদিন ইপিজেড এলাকায় যানজটে বসে থাকতে হয়। রাস্তার অবস্থা বেহাল, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলো পুরো রাস্তাই দখল করে রাখে।’
হাউজিং এস্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ইপিজেডে স্কুল ছুটির সময় কিংবা ছুটির পরে যখন হাজার হাজার শ্রমিক বের হয়, তখন যানজট স্বাভাবিক চিত্র। এখানে একটি ওভারব্রিজ প্রয়োজন এবং সর্বোপরি জনসচেতনতা জরুরি।’
এ বিষয়ে কুমিল্লা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, ‘আমাদের আনসার সদস্যরা ছুটির পর যানজট কমাতে কাজ করছে। তবে সড়কটি সিটি করপোরেশনের আওতায় পড়ে, আমি বিষয়টি সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাব।’
এআরএস
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, “আমাদের জনবল সংকট আছে, এজন্য ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে পারছি না। এটি মূলত ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব।”
তবে কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি মন্তব্য পাওয়া।
স্থানীয়রা বলছেন, এমন দুর্ভোগ প্রতিদিনের। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নেই।