
ছবি : বাংলাদেশের খবর
বরগুনার পাথরঘাটায় মাছ ধরে ফেরার পথে দুটি ট্রলার আটক করে জেলেদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে কোস্টগার্ড। এতে অন্তত দুই জেলে আহত হয়েছেন এবং চারজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলেরা দাবি করেছেন, কোস্টগার্ড সদস্যদের গুলিবর্ষণের সময় ভয়ে অনেকে খালে লাফিয়ে পড়ে আত্মরক্ষা করেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর সংযোগস্থল বাড়ানি খালে দক্ষিণ স্টেশন কোস্টগার্ড পাথরঘাটা ইউনিটের সঙ্গে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে পাথরঘাটার আলম কোম্পানি ও মাসুম কোম্পানির দুটি মডিফাইড ট্রলিং ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড। জেলেদের অভিযোগ, পরে ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন কোস্টগার্ড সদস্যরা। চাঁদা না দেওয়ায় তারা ট্রলারের মাছ ছিনিয়ে নেন এবং ট্রলার ধ্বংসের চেষ্টা চালান।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন জানান, ‘আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় আমাদের একটি ট্রলার সকালে ঘাটে ফিরে আসে। বৈধ কাগজপত্র ও হাইকোর্টের আদেশ দেখিয়েও ট্রলার ছাড়েনি কোস্টগার্ড। পরে রাতে তারা ট্রলার ধ্বংস করতে গেলে জেলেরা বাধা দেয়। তখন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, কোস্টগার্ড গুলি চালায় । অনেকে খালে লাফিয়ে পড়লে ৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের আগেও এক লাখ টাকা দিতে হয়েছে। পরে আবারও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের একপর্যায়ে কোস্টগার্ড প্রায় ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। জেলেরা ইট-পাটকেল ছুড়লে কোস্টগার্ড সদস্যরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। জেলেরা কোস্টগার্ডের একটি মোটরসাইকেল ও একটি পিকআপ ভাঙচুর করেন। এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে পাথরঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, ‘উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোস্টগার্ড, উপজেলা প্রশাসন বা মৎস্য বিভাগ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা দাবি করেছেন, নিয়মিত চাঁদা দাবি, ট্রলার আটক, মারধর ও গুলি ছোড়ার ঘটনায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
খান নাঈম/এমআই