দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রামের মহেশখালী উপকূলে গভীর সমুদ্রে অবস্থিত ভাসমান টার্মিনালে (এফএসআরইউ) তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) জাহাজ থেকে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে চাঁদপুর জেলায়।

জেলার অন্তত ২০ হাজার আবাসিক গ্রাহক বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল থেকে গ্যাসবিহীন অবস্থায় দিন পার করছেন।

চাঁদপুরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিডিসিএল) চাঁদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের বিক্রয় বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মীর ফজলে রাব্বী।

তিনি বলেন, “বৈরী আবহাওয়ার কারণে মহেশখালীতে ভাসমান টার্মিনাল থেকে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চাঁদপুর জেলার গ্যাস সরবরাহে বিপর্যয় ঘটেছে। জেলার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, পাঁচটি সিএনজি স্টেশন ও প্রায় ২০ হাজার আবাসিক সংযোগ সম্পূর্ণরূপে গ্যাসবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।”

বাখরাবাদ গ্যাসের কুমিল্লা অফিস সূত্রে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে।

এর আগে বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কমতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে সাধারণ গ্রাহক, বিশেষ করে গৃহিণীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার পূর্ব শ্রীরামদী এলাকার গৃহিণী নাজমা আক্তার বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই গ্যাস বন্ধ হয়ে যায়। আগেভাগে মাইকিং করে জানালে অন্তত বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’

নিউ ট্রাক রোড এলাকার ঢালী বাড়ির গৃহিণী ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘সকালে গ্যাস দিয়ে চুলা জ্বালাতে গিয়ে দেখি চাপ নেই। কিছুক্ষণ পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। নাস্তা করা যায়নি, অথচ বাসায় অতিথি ছিল। এমন অবস্থায় খুব বিপাকে পড়েছি।’

চাঁদপুরে গ্যাস সরবরাহের একমাত্র উৎস হলো সাগরের এলএনজি, যা মহেশখালী টার্মিনাল থেকে লাকসামের বিজরা হয়ে চাঁদপুরে আসে। সাগর উত্তাল হলে নিরাপত্তার স্বার্থে জাহাজ থেকে টার্মিনালে সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাকরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে ফিরলেই গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

আলআমিন ভূঁইয়া/এআরএস