ফেনীর স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়োগ
‘প্রথমে ৪ লাখ দাও, পরে দেখা যাবে’ চাকরি বাণিজ্যের অডিও ফাঁস

ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৩:৩৪
-6853bd96b8ae2.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ফেনীর স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন পরশুরাম উপজেলার এক ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ধারী ব্যক্তি।
অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম নাহিদ রাব্বি। তার বিরুদ্ধে ২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। যেখানে স্পষ্টভাবে টাকা দাবি করতে শোনা গেছে তাকে।
নাহিদ রাব্বি ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি রেলওয়ে কর্মচারী নুর নবীর ছেলে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি একই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে পরীক্ষার একদিন আগে ৪ লাখ টাকা নগদ ও মূল সনদপত্র দাবি করেন।
অডিও ক্লিপে চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, ‘আচ্ছা, তাহলে বাড়িতে কথা বলে জানাবো। আপনি মোট ১০ লাখই চাইছেন, তাই না?’
উত্তরে নাহিদ রাব্বি বলেন, ‘এক পয়সাও কমানো যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। না দিলে সে (চাকরি দেওয়ার আশ্বাসদাতা) উল্টে যাবে। স্ট্যাম্প করা হবে, সব আমার মাধ্যমে হবে।’
চাকরিপ্রত্যাশী কিছু সময় চাইলে রাব্বি তাতে রাজি হননি এবং বলেন, ‘সে রকম ভালোবাসা বাংলাদেশে নাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়েত বিন করিম বলেন, ‘অডিও রেকর্ডসহ অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে, তারা কাজ করছে। নিয়োগে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’
এদিকে, নাহিদ রাব্বিকে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা’ হিসেবে কিছু গণমাধ্যমে চিহ্নিত করা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য জাহিদুল ইসলাম সৈকত।
তিনি বলেন, ‘নাহিদ রাব্বির সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই। সে একজন স্বঘোষিত প্রতিনিধি। এনসিপির এখনো ফেনী জেলায় কোনো কমিটি গঠিত হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম বলেন, ‘ফেনীতে এই মুহূর্তে আমাদের কোনো অফিসিয়াল কমিটি নেই। কেউ যদি আমাদের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতির চেষ্টা করে, সেটার দায়ভার আমরা নেব না।’
নাহিদ রাব্বির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ১০টায় ফেনী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় স্বাস্থ্য সহকারীসহ ১১৫টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৯৯ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ৫ জন পরিসংখ্যানবিদ, ৬ জন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, ৪ জন চালক ও ১ জন ল্যাবরেটরি এটেনডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। পরীক্ষায় মোট ১২ হাজার ৪৪৮ জন অংশ নিচ্ছেন। গড়ে প্রতি পদের জন্য প্রতিযোগিতা করছেন ১০৮ জন।
এআরএস