নারায়ণগঞ্জে বকেয়া হোল্ডিং কর ৪৮ কোটি, নাসিকের মেলায় নেই সাড়া

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৫:৪০
-6853daf357b33.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
বৃষ্টির কারণে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত করমেলা এবার নগরবাসীর তেমন আগ্রহ পায়নি। কর পরিশোধে নাগরিকদের উদ্বুদ্ধ করতে নারায়ণগঞ্জের নগর ভবনের সামনে ১৬ জুন থেকে ১৫ দিন ব্যাপী করমেলা মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের তিনটি কর অঞ্চল—নারায়ণগঞ্জ নগরাঞ্চল, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল—এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বকেয়া কর রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ কর অঞ্চলে। এই অঞ্চলের মোট বকেয়া হোল্ডিং করের পরিমাণ ৪৮ কোটি টাকার বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করমেলায় প্রথম দিনই অংশগ্রহণ ছিল কম। দ্বিতীয় দিন কিছুটা ভিড় দেখা গেলেও তৃতীয় দিন তা আবার কমে যায়। করদাতারা কেউ কেউ শুধু তথ্য জানতে এসেছেন, কিন্তু কর পরিশোধে আগ্রহ দেখায়নি।
সিদ্ধিরগঞ্জ কর অঞ্চলের একজন সহকারী কর কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এই অঞ্চলে শিল্প কারখানা, আবাসিক প্রকল্প ও বিপুল সংখ্যক হোল্ডিং রয়েছে। কিন্তু অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে কর দেন না। মামলা চলছে অনেক হোল্ডিংয়ের বিরুদ্ধে। আবার অনেকে নিজের হোল্ডিংকে বাণিজ্যিক ব্যবহার করলেও আবাসিক হোল্ডিং হিসেবে রেজিস্ট্রি করে রেখেছেন, ফলে কর কম পড়ছে।”
নগরভবনে এক করদাতা জানান, “আমরা নিয়মিত কর দিতে চাই, কিন্তু কর রেট হঠাৎ বাড়িয়ে দিলে অনেকে বিপাকে পড়েন। তাছাড়া অনলাইন পেমেন্ট এখনো সহজ না হওয়ায় অনেকে এসে ফিরে যান।”
সিটি করপোরেশনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা নাগরিকদের উৎসাহ দিতে করমেলার আয়োজন করেছিলাম। আশা করেছিলাম মেলা থেকে অন্তত ১ কোটি টাকার কর আদায় হবে, কিন্তু তা হয়নি। তবে এটিকে ব্যর্থতা বলা যাবে না, আমরা বিষয়টি বিশ্লেষণ করে পরবর্তী উদ্যোগ নেব।”
তিনি আরও জানান, কর পরিশোধে উৎসাহ বাড়াতে আগামীতে ওয়ার্ড-ভিত্তিক ক্যাম্পেইনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কর ফাঁকি দেওয়া হোল্ডিংয়ের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপও নেওয়া হবে।
প্রশ্ন উঠেছে, করমেলায় কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ার পেছনে দায় কার? নগরবাসীর অনাগ্রহ, নাকি সিটি করপোরেশনের সচেতনতা কার্যক্রমের ঘাটতি? শহরের কর আদায়ে যে সংকট দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে, করমেলা তার একটা প্রতিচ্ছবি মাত্র।