
খাগড়াছড়ির জেলা সদর থেকে পানছড়ি উপজেলার ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের পাশে থাকা শত শত ছায়াদানকারী রেইন ট্রি ও শিরিষ গাছকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে গাছের ছাল (বাকল) তুলে নেওয়ার ফলে ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে এসব গাছ। গত কয়েক বছরে অন্তত ২০০টিরও বেশি পূর্ণবয়স্ক বৃক্ষ এভাবে নিধন করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা জানান, গাছের বাকল তুলে নেওয়াকে গার্ডলিং বলা হয়। এতে গাছের ক্যাম্বিয়াম লেয়ারে খাদ্য চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গাছ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় এবং ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে মারা যায়।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সড়কের বেশ কিছু গাছ এভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এ ঘটনায় পানছড়ি, দীঘিনালা ও সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।’
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘আমরা তিন থানায় জিডি গ্রহণ করেছি। তদন্ত করে গাছ কর্তন ও হত্যা কাজে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। যাতে এ ধরনের অপরাধ আর না ঘটে, সেজন্য কঠোর নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘বৃক্ষ হত্যা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাছ কাটার স্থানগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাইনবোর্ড স্থাপন এবং জড়িতদের সনাক্তে কাজ শুরু হয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এসব গাছ দীর্ঘদিন ধরে পথচারীদের ছায়া দিচ্ছে, বজায় রাখছে পরিবেশের ভারসাম্য। এভাবে গাছ মেরে ফেলা শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, মানুষের জন্যও হুমকি।
পরিবেশ সচেতন নাগরিক ও সংগঠনগুলোর দাবি, দায়ীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ধরনের বৃক্ষ হত্যার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
ছোটন বিশ্বাস/ওএফ