
ছবি : প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বিভিন্ন হাটবাজারে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে তরল দুধ। বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকায়—যা বাজারের বোতলজাত পানির দামের সমান! এতে চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে স্থানী খামারিদের।
শনিবার (২১ জুন) সকালে উপজেলার সিংজুরী বাজারে দেখা যায়, আশেপাশের অন্তত ২০ গ্রামের খামারিরা প্রতিদিনের মতো দুধ বিক্রি করতে এসেছেন। কিন্তু চাহিদা কম থাকায় তারা বাধ্য হচ্ছেন উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে দুধ বিক্রি করতে।
স্থানীয় খামারি মজনু মিইয়া জানান, “আজ ১৮ কেজি দুধ এনেছি, কিন্তু ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। যেখানে গরুর জন্য এক কেজি ভুসি কিনতে হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে, সেখানে এই দরে দুধ বিক্রি করে খরচও ওঠে না।”
একই হতাশা ব্যক্ত করে কৃষক আব্দুল হালেম বলেন, “৯ লিটার দুধ এনেছি, ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এতে গরুর খাবার কেনাও সম্ভব হচ্ছে না।”
পাইকার হাবিব ঘোষ জানিয়েছেন, বৃষ্টিপাত এবং বাজারে ফলের আধিক্যের কারণে দুধের ব্যবহার কমে গেছে। যার কারণে মিষ্টির দোকানগুলোতে দুধের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে প্রান্তিক খামারিদের ওপর।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিনই বাজারে ১৫০ থেকে ২০০ মন দুধ কেনাবেচা হয়। তবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে দুধের ন্যায্য দাম না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উৎপাদকরা।
খামারিরা বলছেন, দুধের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি। সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা ও দুধের সংরক্ষণ-প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা উন্নত করা না গেলে ভবিষ্যতে আরও খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এ নিয়ে জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, “আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। বর্তমানে দেশীয় ফলের মৌসুমে দুধের চাহিদা কিছুটা কম। তবে কিছুদিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াসহ তরল দুধের ন্যায্য দাম পাবে কৃষকরা।”
আফ্রিদি আহাম্মেদ/এএ