আরিচা ঘাটে গোপন বাণিজ্য
অভিযান চলে, তবু থামে না জালের গোপন বেচাকেনা
সিন্ডিকেটে ফরহাস-ইছাকের দাপট, প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে ব্যবসা

আফ্রিদি আহাম্মেদ, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ২১:৩৩
-685822374953f.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাটে নিষিদ্ধ চায়না কারেন্ট জাল ও সুতা বিক্রির অবৈধ ব্যবসা দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, একাধিক অসাধু ব্যবসায়ী অভিনব কৌশলে নিষিদ্ধ জাল গুদামজাত ও বিক্রি করে চলেছেন। কখনো গোপন গুদামে, আবার কখনো ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এসব জাল।
অবৈধ ব্যবসা ঠেকাতে প্রশাসনের অভিযান চলমান থাকলেও, বিক্রেতারা একের পর এক কৌশল বদলে এই বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, অভিযানের পর ধরা পড়লেও অনেক সময় সংশ্লিষ্টদের নামমাত্র জরিমানা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ায় অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
শিবালয়ের পদ্মা-যমুনা নদী সংলগ্ন এলাকায় বর্ষাকালে মাছ ধরার সরঞ্জামের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এ সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও সুতা বিক্রি শুরু করেছেন।
আরিচা ঘাট ঘিরে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান, যেগুলো রাজবাড়ী, পাবনা ও টাঙ্গাইলের জেলেদের প্রধান গন্তব্য হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরহাস হোসেন, আসলাম মোল্লা, ইছাক মোল্লা, জালাল উদ্দিন, রোস্তম মোল্লা ও সায়েম মোল্লাসহ কয়েকজন ব্যক্তি এই অবৈধ ব্যবসায় জড়িত।
কয়েক বছর আগে পরিচালিত প্রশাসনিক অভিযানে বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল উদ্ধার ও অর্থদণ্ড দেওয়া হলেও, বর্তমানে ব্যবসায়ীরা মোবাইলফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে গোপন গুদাম থেকে পণ্য সরবরাহের কৌশল নিয়েছেন। ফলে নিয়মিত তল্লাশি চালিয়েও অনেক সময় তাদের ধরা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ফোন করলে আসলাম মোল্লা এ প্রতিবেদককে হুমকি দেন এবং এই বিষয়ে আলোচনা না করে বিরত থাকতে বলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, ‘এই ব্যবসায় ফরহাস ও ইছাক মোল্লার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। বিক্রি থেকে সরবরাহ—সবকিছু তারা ম্যানেজ করেই চালাচ্ছে।’
শিবালয় বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম রাজু আহম্মেদ বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বাজারের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ব্যবসায়ী সমিতি এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে সক্রিয় হচ্ছে এবং প্রশাসনের সহযোগিতাও আমরা প্রত্যাশা করি।’
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, ‘অবৈধ জাল ও সরঞ্জাম বিক্রির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাংবাদিককে হুমকি প্রদান করায় আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও জানান, ১৯ জুন আসলাম মোল্লাকে ১৯৫০ সালের মাছ সংরক্ষণ আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এআরএস