গৃদকালিন্দিয়া কলেজ
কলেজের ‘গোপন খরচ’ শিক্ষার্থীদের কাঁধে, প্রবেশপত্রে ফি ৮০০ টাকা
অতিরিক্ত ৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ফি আদায়

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ২০:৪৮
-685abaa1c8411.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। যদিও বোর্ডের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী প্রবেশপত্রের জন্য আলাদা কোনো ফি নেওয়ার বিধান নেই।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের নিয়মিত, অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৫৮৬ জন।
তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রবেশপত্রের নামে আদায় করা হয়েছে ৮০০ টাকা করে। ফলে মোট আদায়কৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা।
বিষয়টি নিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরল স্বীকারোক্তিতে জানান, ‘সত্যি কথা বলতে কি, কেন্দ্র খরচ ছাড়াও আমাদের অনেক খরচ রয়েছে। পুলিশের ডিউটি, নাস্তা, সম্মানী দেওয়া—সব মিলিয়ে কিছু খরচ হয়। সেই খরচ পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকেই তোলা হয়।’
তবে বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী এই খরচ কেন্দ্র ফি-র মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে কেন্দ্র ফি ধরা হয়েছে ৮৫৫ টাকা, আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য ৪৯৫ টাকা। তখন প্রশ্ন ওঠে—এই টাকা কোথায় যায়? একজন অভিভাবকের ভাষায়, ‘আমাদের সন্তানদের কতোবার জবাই করা হবে?’
এক পরীক্ষার্থীর ভাই জানান, তার বোনের কাছ থেকে ৮০০ টাকা প্রবেশপত্র এবং ২০০ টাকা মিলাদ বাবদ নেওয়া হয়েছে। মিলাদের জন্য টাকা দিতে আপত্তি না থাকলেও প্রবেশপত্রের নামে টাকা আদায় নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা আনুমানিক ৭০০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছি। সবার কাছ থেকেই ৮০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সচিব খন্দকার সাদেকুর রহমান বলেন, ‘প্রবেশপত্র বাবদ কোনো টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই। কেউ যদি তা করে থাকে, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল্লাহ বলেন, ‘প্রবেশপত্রের জন্য আলাদা করে ফি নেওয়ার কোনো বিধান নেই। অন্য কোনো ফি বকেয়া থাকলে তা ভিন্ন বিষয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘বোর্ড নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। কেউ নিয়ম ভাঙলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নূরুল ইসলাম ফরহাদ/এআরএস