চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে আয়োজিত এক গণশুনানিতে জনবল সংকট, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব ও দালালচক্রের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলে ধরেছেন সেবাগ্রহীতারা।

বুধবার (২৫ জুন) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সচেতন নাগরিক কমিটির যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন সনাকের সাবেক সভাপতি এস.এম.এ.কে. জাহাঙ্গীর। সঞ্চালনায় ছিলেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর এ.জি.এম. জাহাঙ্গীর আলম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতালের সেবায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। আলট্রাসনোগ্রাফি ও ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেবা চালু হয়েছে। প্রতিদিন নরমাল ডেলিভারি হচ্ছে। তবে অ্যানেস্থেসিস্ট না থাকায় সিজারিয়ান ডেলিভারি সপ্তাহে মাত্র একবার করা সম্ভব।

তিনি জানান, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮০ জনের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ রোগীকে সেবা দেওয়া হয়। তবে জনবল সীমিত হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

সেবা গ্রহীতারা অভিযোগ করেন, ওয়ার্ড ও টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার রাখা হয় না, নার্সদের সময়মতো পাওয়া যায় না এবং ডাক্তাররা অন্তঃবিভাগে নির্ধারিত দুইবারের জায়গায় একবারই ভিজিট করেন। অনেকেই দালালদের খপ্পরে পড়ে মূল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অতিরিক্ত উপস্থিতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।

তবে কেউ কেউ আন্তরিক সেবা পাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন আবুল হাসেম, জেসমিন আকতার, সাকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ ছৈয়দ, কহিনুর আকতার প্রমুখ।

সনাক পটিয়ার সহ-সভাপতি সাংবাদিক আবদুর রাজ্জাক বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে জনসাধারণ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারলে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন সম্ভব।

এস.এম.এ.কে. জাহাঙ্গীর বলেন, রোগী ও সেবাদানকারীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে এ ধরনের গণশুনানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সমালোচনা থাকবে, আলোচনাও হবে-তবেই উন্নয়ন সম্ভব।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাজ্জাদ ওসমান, কনসালটেন্ট ডা. সুলতানা আকতার, সিনিয়র স্টাফ নার্স অর্পিতা দত্ত, সাংবাদিক আহমদ উল্লাহ (সমকাল), রবিউল আলম ছোটন (পূর্বকোণ) এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি তালহা রহমান প্রমুখ।

ডা. আবু তৈয়ব আশ্বাস দেন, উঠে আসা অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতেও কেউ চাইলে যেকোনো সময় সেবার বিষয়ে মতামত ও অভিযোগ জানাতে পারেন।

ইমরান হোসেন মুন্না/এমএম