নারায়ণগঞ্জ শহরের উন্মুক্ত স্থানে বসছে বজ্র নিরোধক দণ্ড

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ১৬:০৩
-685d1b03f1aa5.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হচ্ছে বজ্র নিরোধক দণ্ড। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাত বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এ উদ্যোগ নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)।
নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, বজ্র নিরোধক দণ্ড উচ্চ ভবন, গাছ কিংবা খোলা স্থানে বজ্রপাতের আঘাত সরাসরি মাটিতে নির্গত করে দেয়। এতে প্রাণহানি, অগ্নিকাণ্ডসহ নানা দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
প্রথম পর্যায়ে চাষাঢ়া গোলচত্বর, সার্কিট হাউস মোড়, আলী আহাম্মদ চত্বর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, শহীদ মিনার এলাকা এবং নাসিক ভবনের ছাদে আধুনিক প্রযুক্তির স্টেইনলেস স্টিলের দণ্ড বসানো হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে বড় স্কুল, হাসপাতাল, খেলার মাঠ ও অন্যান্য উন্মুক্ত স্থানে এগুলো স্থাপন করা হবে।
চাষাঢ়া এলাকার বাসিন্দারা নাসিকের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘শহরের অনেক জায়গা খোলা। বজ্রপাত হলে নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব হয়। এই দণ্ড বসালে অন্তত আতঙ্ক কমবে।’’
তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদ ওমর বলেন, ‘‘চাষাঢ়ায় আমরা আড্ডা দিই, অনেক সময় বৃষ্টি বা বজ্রপাত হলে দুশ্চিন্তায় পড়ি। এখন অন্তত কিছুটা নিরাপত্তা পাব।’’
আবহাওয়াবিদদের মতে, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বজ্রপাতের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বজ্রপাতের হার বেড়েছে। নারায়ণগঞ্জেও এর ব্যতিক্রম নয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, ‘‘বড় হাইরাইজ ভবন বা উন্মুক্ত স্থানে বজ্র নিরোধক দণ্ড বসালে সেসব এলাকায় বজ্রপাতের আশঙ্কা অনেক কমে আসে। জনসমাগমপূর্ণ এলাকাগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত করতেই এই উদ্যোগ।’’
পরিবেশ ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, বজ্রপাত মোকাবেলায় নাগরিক সচেতনতাও জরুরি। তারা স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর সুপারিশ করেছেন।
নগরবাসীর প্রত্যাশা, এ উদ্যোগ যেন কেবল এককালীন না হয়, বরং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও বিস্তারের মাধ্যমে এটি কার্যকর থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি ও সচেতনতা—দুটিই এখন সময়ের দাবি।