Logo

সারাদেশ

আ.লীগ নেতাদের নিয়ে মাদকবিরোধী সমাবেশ, সমালোচনার ঝড়

Icon

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬:৪৫

আ.লীগ নেতাদের নিয়ে মাদকবিরোধী সমাবেশ, সমালোচনার ঝড়

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বড় খোচাবাড়িতে মাদকবিরোধী সমাবেশে অংশ নিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ) পদধারী জনপ্রতিনিধিরা। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

সোমবার (৩০ জুন) দিনব্যাপী বলাকা উদ্যানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা প্রশাসন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা, পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম, সদর থানা ও ভুল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সচিব ও গ্রাম পুলিশ সদস্যরাও।

তবে এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কয়েকজন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য, যাদের মধ্যে অনেকেই আলোচিত মামলার আসামি। তাদের মধ্যে রয়েছেন-রুহিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু, রুহিয়া থানা আওয়ামী লীগের তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও ঢোলারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র রায়, চিলারং ইউপি চেয়ারম্যান ফয়জুল রহমান এবং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা সচিন চন্দ্র।

সমাবেশে এসব নেতারা বক্তব্যও দেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের জন্য ভোজ ও সাংস্কৃতিক আয়োজনও হয়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া এসব ব্যক্তি কেউ কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত সহিংসতার মামলায় অভিযুক্ত এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। ফেসবুক ব্যবহারকারী হিমেল লেখেন, "ঠাকুরগাঁও উপজেলা প্রশাসনের মাদকবিরোধী সমাবেশে নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিতি দেখে মনে হলো এটি তাদের মিলনমেলা।"

খোকা নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, ‘মাদকবিরোধী সমাবেশ নয়, এটি ছিল আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পুনর্বাসনের আয়োজন। প্রশাসনের উঁচুপর্যায়ের কর্মকর্তারা জানেন না-তাদের সঙ্গে কারা বসেছেন? যাদের কেউ কেউ জনগণের বিরুদ্ধে হত্যা, দমন-পীড়নের নির্দেশ দিয়েছেন, তারাই আজ আবার প্রশাসনের আয়োজনে মঞ্চে?’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক আন্দোলনকারী বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের এক বছর না পার হতেই প্রশাসন স্বৈরাচারী দলের নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠান করছে দেখে হতাশ হয়েছি। যাদের বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, আজ তাদের আবার মঞ্চে দেখা গেল প্রশাসনের সঙ্গে। এটা আন্দোলনের প্রতি চরম অবমূল্যায়ন।’

একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘আমরা আন্দোলনে গিয়ে পরিবারকে না শুনে রাস্তায় ছিলাম, কেউ আহত, কেউ মামলার আসামি। আজ তাদেরই দেখা গেল সরকারি অনুষ্ঠানে হাসিমুখে ভোজে অংশ নিতে। প্রশাসন কি এভাবেই পুরোনো শাসকদের ফিরিয়ে আনতে চায়?’

এ বিষয়ে সমাবেশের সভাপতি ইউএনও খাইরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাদের নাম আসছে তারা মামলার আসামি কি না, সেটা বলতে পারবে আদালত ও পুলিশ। এখন পর্যন্ত আমার দপ্তরে কোনো ধরনের কাগজ আসেনি। সরকার যদি তাদের বহাল রাখে, ইউএনও হিসেবে আমার কিছু করার নেই।’

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

  • আবু সালেহ/এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জুলাই অভ্যুত্থান হত্যা / খুন মামলা আওয়ামী লীগ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর