কালবৈশাখীতে ভেঙে গেছে ঘর, তৈরি করে দিলেন ইউএনও

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ১৮:২৫

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার জোহরা বেগমের ঘরটা এমনিতেই নড়বড়ে ছিল। ঝড়ের সময় ভয়ে থাকতেন। এর মধ্যে একদিন ঝড়ে একটি নারিকেল গাছ ভেঙে পড়ে ঘরের উপর। এতেই দুমড়ে-মুচড়ে যায় বৃদ্ধা জোহরা বেগমের বসতঘর। চোখের সামনে যখন প্রবল অন্ধকার, তখন আলো হয়ে পাশে দাঁড়ায় স্থানীয় প্রশাসন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন সেমিপাকা নতুন ঘর পেয়ে অনেক খুশি তিনি।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে অসহায় জোহরা বেগমকে নতুন ঘর বুঝিয়ে দেন ইউএনও রাসেল ইকবাল। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছাও জানানো হয়। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম রায়হানুর রহমান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকত উপস্থিত ছিলেন।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার বুড়াইচ এলাকার লস্কারবাড়ির অসহায় বৃদ্ধা জোহরা বেগমের বসতঘরটি দুমড়ে–মুচড়ে যায়। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন জোহরা বেগম। স্বামী চুন্নু লস্কারের মৃত্যুর পর এই ধরাধামে কেউ নেই নিঃসন্তান এই নারীর। নেই কথা বলার ঠিকমতো বাকশক্তি। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোরকম চলে তার সংসার। এরমধ্যে কীভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। জোহরা বেগমের ঘর ভেঙে পড়ার কথা জানতে পারেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নতুন করে ঘরটি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এরপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ-টিআর (৩য় পর্যায়) বরাদ্দ হতে এক লক্ষ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে জোহরা বেগমের জন্য দুর্যোগ সহনীয় একটি বাসগৃহ নির্মাণ করা হয়।
নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে অসহায় জোহরা বেগম জানান, নতুন ঘর পাওয়ার কথা তিনি ভাবতেও পারছিলেন না। এখন নতুন ঘর পেয়ে মনে অনেক শান্তি পাচ্ছেন। আগে ঝড়-বৃষ্টির সময় ভয়ে ঘুমাতে পারতেন না। এখন আর সেই ভয়ও থাকবে না।
জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, সুবিশাল এই পৃথিবীতে জোহরা বেগমেরও রয়েছে নিরাপদ ও সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার। সদ্য নির্মিত ঘরটি শুধু আশ্রয়ই নয়, এটিই তাঁর পরিচয়, তাঁর ঠিকানা।